পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুক্তি" : তাহার কমলাকান্ত চরিত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়াইয়া গিয়াছেন। কমলাকান্ত বলিতে আমরা বঙ্কিমচন্দ্রকেই বুঝিয়া থাকি। কমলাকাস্তু আইডিয়ালিস্ট-আদর্শবাদী এবং বাস্তবের উৰ্দ্ধলোকে তাহার কল্পনাবিহার। কমলাকান্ত কবি, প্রেমিক এবং বাংলা-সাহিত্যের যাহা প্রথম —স্বদেশপ্রেমিক । গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ লিখিতে লিখিতে বঙ্কিমচন্দ্রের স্বভাবত: রহস্তপ্রিয় মন প্রথমটা লোকরহস্যে’র সহজ পথে একটা মুক্তির উপায় আবিষ্কার করিয়া কতক সাস্তুনা লাভ করিয়াছিল। কিন্তু মাসের পর মাস নিছক রহস্য স্থষ্টি করিয়া তৃপ্ত থাকিবার মত পল্লবগ্রাহী মন তাহার ছিল না। প্রবহমাণ সংসার-স্রোতের উপরিভাগে আপাতমনোহর তরঙ্গভঙ্গে ভাসিতে ভাসিতে তীক্ষুধী বঙ্কিমচন্দ্র কখনও কখনও গভীর রহস্যগহনে তলাইয়া যাইতেন এবং মরণশীল মানবের ও বিশেয করিয়া যে-সকল হতভাগ্য জীব তাহার আশে পাশে চিন্তাহীন নিঃশঙ্কতায় ভাসমান, তাহাদের ভয়াবহ পরিণতির কথা আপন অন্তরে অতুভব করিয়া হাস্ক হাসির বুদ্ধ-বিলাসে তাহার মন সায় দিত না। অৰ্দ্ধোন্মাদ নেশাখের কমলাকাস্তের শয়ণাপন্ন হওয়া ছাড়া তখন তাহার উপায় ছিল না। সোজাসুজি সজ্ঞানে যে-সকল কথা বলিতে তিনি সঙ্কোচ বোধ করিতেন, কমলাকাম্ভের মুখ দিয়া সেই সকল কথা তিনি অলঙ্কোচে বলিতে পারিতেন, এবং এই রহস্যময় পাগলকে কেন্দ্র করিয়া মাসের পর মাস পাঠক ভুলাইতে র্তাহাকে বেগ পাইতে হইত না। এক আধারে বঙ্গের শর্করামণ্ডিত কাব্য, পলিটিক্স, সমাজবিজ্ঞান এবং দর্শন পরিবেশনের উপায় স্বষ্টি করিয়া বঙ্কিমচন্দ্র নিজের কাজ অনেকটা সহজ কৰিয়া লইলেন। কমলাকাস্তু-জন্মের ইহাই ইতিহাস। কমলাকাস্তের দর্শনকে