পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

HR లిe & } } উপসর্গের অর্থ বিচার। NS প্রতিব্যক্তি প্ৰত্যহ প্ৰভৃতি শব্দের আদিস্থিত প্ৰতি’র অর্থ কি-হিসাবে প্ৰতিপক্ষতাসূচক বা পরাজুখিতা-সূচক তাহা আমি খুলিয়া-খালিয়া বলিয়াছি, কিন্তু শাস্ত্রী মহাশয় সে সকল কথা গ্ৰাহে না আনিয়া প্ৰতিবাদচ্ছলে বলিলেন যে, “প্ৰতিজন” বলিলে প্ৰত্যেকের সহিত অপর সকলের কাহারো কোনো সম্বন্ধ বুঝায় না-হ্রস্সুতরাং প্ৰতিপক্ষতা সম্বন্ধ বুঝায় না। “প্রতি ব্যক্তি” বলিতে প্রত্যেকের সহিত অপর ব্যক্তিদিগের সম্বন্ধ বুঝায় না—এটা তিনি ভারি ভুল বুঝিয়াছেন। একটা বটবৃক্ষ যদি একাকী মাঠের মাঝখানে দণ্ডায়মান থাকে। তবে তাহার তলে বসিয়া কোনো পথিক এরূপ কথা বলে না যে, আমি প্ৰতি বটবৃক্ষের তলে বসিয়াছি। পক্ষান্তরে, একজন আম্র-ব্যবসায়ী স্বচ্ছন্দে এরূপ কথা বলিতে পারে যে, আমি আজি আমোদ্যানের প্রতিবৃক্ষের সমস্ত আম উৎপাটন’করিব । তবেই হইতেছে যে, আম্রোস্তানের এক-একটী বৃক্ষ অপরাপর বৃক্ষের সহিত, ব্যষ্টি-সমষ্টিসম্বন্ধে জড়িত রহিয়াছে বলিয়াই, তদুপলক্ষে “প্ৰতিবৃক্ষ” এই বচনটীর সার্থকতা হয় । আগে তিন বৃক্ষ, বা চার বৃক্ষ, বা আট বৃক্ষ, বা দশ বৃক্ষ, একত্রে মিলিয়া মিশিয়া” অবস্থান করে-পরে “প্রতিবৃক্ষ’ বলিয়া অপর সকলের সহিত প্ৰত্যেকের সম্বন্ধ রহিত করিয়াতাহাকে এক-ঘরে” করা হয় । সম্বন্ধ রহিত করা প্ৰতিপক্ষতারই লক্ষণ । আমি যদি বলি যে, তোমার সহিত আমার আজ অবধি সম্বন্ধ রহিত হইল, তবে সেই মুহুৰ্ত্তে তোমার * আমার মধ্যে মিত্ৰতা-সম্বন্ধ খণ্ডিত হইয়া গিয়া তাহার পরিবর্তে প্ৰতিপক্ষতা-সম্বন্ধ সংস্থাপিত হইবে। সম্বন্ধ সাধারণতঃ দুইরূপ, (১) অন্বয়াত্মক ( positive ), (২) ব্যতিরোেকাত্মক ( negative ) । শাস্ত্রী মহাশয় যদি বলিতেন যে, “প্ৰতিজন” বলিলে অপর-সকলের সহিত প্রত্যেকের অস্বয়াত্মক সম্বন্ধ রহিত হইয়া যায়, তাহা হইলে তাহার কথা ঠিকৃ হইত ; কিন্তু তাহার প্রত্যুত্তরে আমি বলিতাম যে, অন্বয়াত্মক সম্বন্ধ বিলুপ্ত হইবার সঙ্গে সঙ্গে তাহার পরিত্যক্ত স্থানে ব্যতিরোেকাত্মক সম্বন্ধ মস্তক উত্তোলন করিয়া দণ্ডায়মান হয়—যেহেতু মিলনের সম্বন্ধ রহিত করা’র নামই পরামুখিতা-সম্বন্ধ সংস্থাপন করা। আমি তাই বলিয়াছি যে, “সকল” বলিলে বুঝায়-ব্যষ্টি সমষ্টির অন্তভুক্ত অর্থাৎ প্ৰত্যেকে সমস্তের অন্তভুক্ত ; “প্ৰতি” বলিলে বুঝায়-ব্যষ্টি সমষ্টি হইতে ( অর্থাৎ সাকল্য হইতে ) মুখ ফিরাইয়া দাড়াইয়া আপনার স্বাতন্ত্র্য প্ৰজ্ঞাপন করিতেছে। ফলে, প্ৰতি ব্যক্তির আদিস্থিত “প্রতি” এই শব্দটীতে এক রকমের প্রতিপক্ষতা-অৰ্থ প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে, ইহা কেহই অস্বীকার করিতে পারেন না ; আর সে প্ৰতিপক্ষতা যে কি রকমের প্রতিপক্ষতা, তাহা আমি যথাসাধ্য স্পষ্ট করিয়া খুলিয়া বলিত ক্ৰটি করি নাই। শাস্ত্রী মহাশয় আরো বলিলেন যে, প্রতি ব্যক্তির আদিতে যে “প্রতি” শব্দ দেখা যায় তাহা উপসৰ্গই নহে। তাহার এ কথা খুবই সত্য ইহা আমি স্বীকার করি। কিন্তু শাস্ত্রী মহাশয় নিজে কি বলিয়াছেন ? তিনি তঁহার বক্ততার গোড়াতেই স্পষ্টাক্ষরে বলিয়াছেন যে, উপসর্গ যখন মূল শব্দের সহিত সংশ্লিষ্ট থাকে তখনই বিশিষ্টরূপে তাহার নাম দেওয়া হয় উপসৰ্গ ; পক্ষান্তরে, যখন