পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । [ 8ણ મસff 1. छेद्धल, বিশেষরূপে, ছাত্র জিজ্ঞাসা করিল ‘সম’ এই উপসর্গের অর্থ কি ? উত্তর, ‘সম্যক্রূপে । ইত্যাদি। " এইরূপ উত্তর তঁহার মতে “উত্তরই নহে।” কারণ যে “প্ৰ’ ‘বি’ ও ‘সম’ এই সকল উপসর্গের অর্থই জানে না, সে আবার ঐ সকল উপসৰ্গযুক্ত পদের অর্থ কেমন করিয়া জানিবে ? এক একটী করিয়া গ্ৰহণ করা যাউক । “প্ৰ’ ইহার অর্থ প্ৰকৃষ্টরূপে, কিন্তু “প্ৰকৃষ্টরূপে’ কি তাহা জানিতে হইলে “প্র’ ও ‘কৃষ্ট” এই দুইটী শব্দের অর্থ জানিতে হইবে, সুতরাং “প্র’র অর্থই যখন অজ্ঞাত), তখন প্রকৃষ্টরূপে বলিলে উহার অর্থ কিরূপে জানা যাইবে ? এইরূপ অন্যান্য স্থলও বুঝতে হইবে । এই যুক্তিটা আপাততঃ শুনিতে বেশ বােধ হয়। যুক্তির মূল কথা এই যে, “প্রকৃষ্ট" শব্দের অর্থজ্ঞান ‘প্র” ও “কৃষ্ট” এই দুই শব্দের অর্থজ্ঞান সাপেক্ষ এবং এই মূল কথা । (Major Premiss) সত্য হইলে প্ৰবন্ধকারের সিদ্ধান্ত অর্থাৎ প্রকৃষ্টরূপে বলিলে “প্র’র অর্থ বলা হইল না, ইহাও সত্য হইবে। কিন্তু এক্ষণে কথা এই যে, ঐ মূল যুক্তিটী সত্য কি ? প্রকৃষ্ট পদাৰ্থ কি তাহা জানিতে হইলে যে, “প্র’ ও ‘কৃষ্ট” এই দুই শব্দের অর্থ জানিতেই হইবে, এ কথাই আমাদের মতে সমীচীন নহে। অনেকে “প্রকৃষ্ট” পদের প্রকৃতি প্ৰত্যয় কিছুই জানেননা অথচ প্রকৃষ্ট পদের অর্থ কি তাহ জানেন। আহার' এই শব্দের বুৎপত্তি কি, তাহা অনেকেই জানেন না, কিন্তু আহার পদার্থ কি তাহ বোধ হয়, সকলেই অবগত আছেন। মূল কথা এই যে, কোন শব্দের অর্থ জানিতে হইলে যে, উহার প্রকৃতি প্ৰত্যয় ও ঐ সকল প্ৰকৃতি প্ৰত্যয়ের অর্থ জানিতেই হইবে, ইহা অপেক্ষা অসার কথা আর কিছুই নাই। ‘গে’ শব্দেষ্ট কি বুঝায় সকলেই তাহা জানেন, কিন্তু উহা যে গম ধাতুর উত্তর ডো প্ৰত্যয় যোগে নিষ্পন্ন তাহা কয়জন জানেন ? আর র্যাহারাও জানেন। তঁহাদেরও ঐ জ্ঞাননিবন্ধন অর্থ বুঝিতে সাহায্য না হইয়া বরং বিলম্বই হয়; কারণ তঁহাদের মনে স্বতঃই এই প্রশ্নের উদয় হয় যে, ‘গে’ শব্দে যদি গমনকারী জীব বুঝায় তবে মনুষ্যই বা ‘গে’ না হইবে কেন ? এই জন্যই প্ৰাচীন শাব্দিকের বলিয়াছেন, “অন্যাচ ওবৃত্তিনিমিত্তং শব্দানং অন্যচ্চ বুৎপত্তিনিমিত্তং’ অর্থাৎ শব্দের প্রবৃত্তি-নিমিত্ত বা শক্যতাবচ্ছেদক ও বুৎপত্তিনিমিত্ত এক নহে; অর্থাৎ শব্দের প্রয়োগ বা ব্যবহার সর্বত্র উহার বুৎপত্তির অনুযায় নহে। যাস্কের নিরক্তে এ বিষয়ের একটী বিস্তৃত বিচার আছে, তাহা পরে উল্লেখ করা যাইবে । ফল কথা এই, যদি প্র ও প্রকৃষ্ট, বি ও বিশেষ, সম ও সম্যক এই ছয়ট শব্দের প্রত্যেক দুইটার অর্থজ্ঞান পরস্পরের অর্থজ্ঞানসাপেক্ষ হইত, তাহা হইলে পণ্ডিত মহাশয়দিগের • প্রণালীকে দোষ দিতে পারা যাইত ; কিন্তু যখন তাহদের অর্থজ্ঞান পরস্পরের অর্থজ্ঞানের সাপেক্ষ নহে, তখন তাঁহাদের প্রণালীকে দােষ দেওয়া যুক্তিযুক্ত নুহে। তিনি নিজে যে উদাহরণ দিয়াছেন, তাহার প্রতি দৃষ্টি করিলেই, এ বিষয় আরও বিশদ বুঝা যাইবে। “প্ৰ” কি না ‘প্রকৃষ্টরূপে" এইরূপ ব্যাখ্যায় দােষ দিবার সময় তিনি ইহার অনুরূপ বিবেচনা করিয়া, একটা উদাহরণ দিয়াছেন, সেই উদাহরণটী এই —“ঘোড়া কি ?’ না। ‘ঘোড়ার গাড়ি’। ‘ঘোড়ার গাড়ি’ কি ? না ‘ঘোড়া পূর্বক গাড়ি’ ইত্যাদি। এখানে দেখুন, ঘোড়ার গাড়ি দুইটী শব্দ, ঐ ধুইটী শব্দের প্রতিপাদ্য বস্তুর জ্ঞান করিতে হইলে, পৃথক পৃথক ভাবে ‘ঘোড়া”, “গাড়ি’ও ষষ্ঠ