পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩০৫ । ] শীতলা-মঙ্গল । | ৬৭ বাচস্পতি পাশা খেলিতেছিলেন। বুড়ীর কথা বড়ই বিরক্তিকুর হইয়া উঠিল, তিনি অক্ষপাটী * ফেলিয়া মারিলেন। শীতলা” গালি দিতে দিতে ক্ৰোধাভরে চলিয়া গেলেন। "তার পর সৰ্ব্বজাতিতে বসন্ত ছড়াইবার সময় কবি কয়েকটা , জাতির বৃত্তির ও স্বভাবের উল্লেখ করিয়াছেন, তন্মধ্যে কতকগুলির উল্লেখ করিতেছি,- ( ১ ) “আসি বলে নাপিত ভাড়ায়ে যায়। নরে।” ( ২) “আগুরি বেচিয়ে পলা প্রবাল মুকুতা ।” ( ৩ ) “গয়ালা বেচয়ে দধি জল মিশাইয়া ।” ( 8 ) “কঁরে চাষ কৈবৰ্ত্ত কোদালে তাড়ে ମଞ୍ଜୁ ।' ( ৫ ) “বাইতি বুনয়ে শয্যা বাজায় মৃদঙ্গ।” (৬) “নগরে যতেক জুগী লাল করে সুতা।” ( ৭ ) “কাট কাটে কোড়ি খায় যতেক শবর । ( ৮ ) ধর্য ধনুক কোল বাজী করয়ে শীকার ৷” এই সকল জাতির অনেকের এখন আর বৃত্তি স্থির নাই ।

  • “রাজা বলে শ্ৰীদেবী শ্ৰীহরিপদ ছাড়ি ।

প্ৰাণ গেলে পূজিতে নারিব পচামুড়ী ৷” আমরা দেখিতেছি, চাঁদ সওদাগর কবি ক্ষেমানন্দ ও কেতকার সাহায্যে মনসাকে“চেংমুড়ী কাণী” বলিত, আর বিরাটরাজ কবি নিত্যানন্দের প্রসাদে শীতলাকে “পচামুড়ী” বলিতে পারিয়াছেন। O বিরাটরাজের পুত্ৰ উত্তরের বসন্তরোগে মৃত্যু হইল। তঁহার পত্নী প্রত্নাবতী তখন পিতৃগৃহে ছিলেন। শীতলা বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণীবেশে গিয়া এই সুসংবাদ দিলেন। তার পর রত্নাবতী সহমৃতার সজা করিষা অর্থাৎ “ভাঙ্গিয়ে আমের ডাল হস্তেতে লইল”। পিতামাতার নিকট বিদায় লইয়া স্বামীর শ্মশানে যাইতে ইচ্ছা করিবামাত্র শীতলার ইচ্ছায় পৃথিবী দেহ সঙ্কুচিত করিলেন, ছমাসের পথ রত্নাবতী বামপদ বাড়াইতেই পার হইয়া আসিল । রত্না একবারে স্বামীর শ্মশানে । তাহার পর সতীর রোদনে দেবীর দয়া হইল। শ্মশানে পুজু হইল, বিরাটপুত্ৰ উত্তর দেবীর কৃপায় জীবন পাইলেন। এই স্থলে কবি শীতলার মুখে বিরাটমহিষীর পূর্ব বৃত্তান্ত বলাইয়াছেন, তাহ নিতান্ত অসংস্কৃতজ্ঞের ন্যায় কথা,- শীতলা বলিলেন সুদেষ্ণা পূৰ্ব্বজন্মে মেনকার কন্যা শকুন্তলা ছিলেন । হস্তিনার রাজা অনরণ্য র্তাহাকে গুপ্তবিবাহ করেন। পঞ্চম বৎসর বয়সে শকুন্তলা মঙ্গলা পূজা করিয়া রাজাকে স্বামী লাভ করেন। কস্তিল মুনির আশ্রমে গুপ্তবিবাহ হয়। শকুন্তলার গর্ভে ভরত জন্মগ্রহণ করেন। শীতলা এই সুদেষ্ণার ভবিষ্যজন্মের কথাও বলেন-সুদেষ্ণা ! পরজন্মে ইন্দ্ৰদ্যুম্নমহিষী সুরুচি হইবেন এবং দারুব্রহ্ম স্থাপন করিবেন।--নিত্যানন্দের উড়িষ্যার সহিত যে কিছু সংশ্ৰব ছিল, তাহা এই বর্ণনা হইতে অনুমিত হইতে পারে।