পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উমিচাঁদের উত্তেজনা।
২৫৫

গতানুশোচনা পরিত্যাগ করিয়া হতভাগ্য উমিচাঁদও কায়মনোবাক্যে ইংরাজের কল্যাণসাধনে নিযুক্ত হইলেন। দিন যাইতে লাগিল;— কিন্তু দিন দিনই ইংরাজের আশালতা বর্দ্ধিত হইয়া উঠিতে লাগিল।

 চতুরচূড়ামণি মাণিকচাঁদ অতীব সাবধানে পদবিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। তাঁহার ভরসা ছিল যে, পূর্ণিয়ার যুদ্ধেই সিরাজের সর্ব্বনাশ হইবে;—যখন তাহা হইল না, তখন তিনি গোপনে গোপনে ইংরাজের সহায়তা করিয়া, প্রকাশ্যে কলিকাতা রক্ষার জন্য বাহ্যাড়ম্বর দেখাইতে ত্রুটি করিলেন না।[১]

 পাদরী বেণ্টু, একজন চুঁচুড়ার পাদরী সাহেব। তিনি ইংরাজদিগের অনুরোধে কয়েক সপ্তাহ কলিকাতায় বাস করিবার উপলক্ষে তথাকার গুপ্ত সংবাদ সংগ্রহ করিয়া পাঠাইলেন। তাঁহার পত্রে পলতার ইংরাজেরা জানিতে পারিলেন যে, “মাণিকচাঁদ নদীর দিকে অনেকগুলি তোপ সাজাইয়া আসর জমকাইয়া রাখিয়াছেন, কিন্তু তাহার সকলই বাহ্যাড়ম্বর! দুর্গে দেড় হাজারের অধিক সিপাহী নাই। কামানগুলি অকর্মণ্য অবস্থায় পড়িয়া রহিয়াছে। টানার দুর্গে কেবল ২০০ সিপাহী আছে; হুগলীতে দুর্গমধ্যে ৫০ জন এবং বাহিরে ৫০০ জনের অধিক পল্টন দেখিতে পাওয়া যাইতেছে না।”[২]

 উমিচাঁদ লিখিয়া পাঠাইলেন যে, “লোকে নবাবের ভয়ে কিছু বলিতে সাহস পাইতেছে না; কিন্তু ইংরাজদিগের পুনরাগমনের জন্য

  1. And yet Omichand and Manikchand were at this time in friendly correspondence with the English, they (negotiated at this time between the Nawab and the English) understanding how to run with the hare and keep with the hound.—Revd, Long.
  2. Long's Selections from the Records of the Government of India, vol. I.