পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
সীতার বনবাস।

লক্ষ্মণের এই তাৎপর্য্যব্যাখ্যাতেই সন্তুষ্ট হইলেন; এবং গঙ্গা পার হইবার নিমিত্ত, নিতান্ত উৎসুক হইয়া, লক্ষ্মণকে বারংবায় তাহার উদেঘাগ করিতে বলিতে লাগিলেন; কিন্তু, গঙ্গা পার হইলেই যে, দুস্তর শোকসাগরে পরিক্ষিপ্ত হইবেন, তখন পর্য্যন্ত কিছুমাত্র বুঝিতে পারিলেন না।

 কিয়ৎ ক্ষণ পরেই, তরণীর সংযোগ হইল। লক্ষ্মণ, সুমন্ত্রকে সেই স্থানে রথ রাখিতে বলিয়া, সীতাকে তরণীতে আরোহণ করাইলেন, এবং, কিয়ৎ ক্ষণ মধ্যেই, তাঁহারে ভাগীরথীর অপর পারে উত্তীর্ণ করিলেন। সীতা, তপোবন দেখিবার নিমিত্ত নিতান্ত উৎসুক হইয়া, তদভিমুখে প্রস্থান করিবার উপক্রম করিলেন। তখন লক্ষ্মণ, বলিলেন, আর্য্যে, কিঞ্চিৎ অপেক্ষা করুন। আমার কিছু বক্তব্য আছে, এই স্থানে নিবেদন করিব। এই বলিয়া, তিনি অপোবদনে অশ্রুবিসর্জন করিতে লাগিলেন। সীতা চকিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, বৎস, কিছু বলিবে বলিয়া, এত ব্যাকুল হইলে কেন? কি বলিবে ত্বরায় বল; তোমার ভাবান্তর দেখিয়া, আমার প্রাণ নিতান্ত ব্যাকুল হইতেছে। তুমি কি, আসিবার সময়, আর্য্যপুত্রের কোনও অশুভঘটনা শুনিয়াছ, অন্য কোনও সর্ব্বনাশ ঘটিয়াছে? কি হইয়াছে, শীঘ্র বল। তখন লক্ষ্মণ বলিলেন, দেবি, বলিব কি, আমার বাক্যনিঃসরণ হইতেছে না; আর্য্যের আজ্ঞাবহ হইয়া,