পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(আরে) অর্থের শেষ কোথা কোথা তার জন্ম অভিধান ঘাটা, সে কি ভাবুকের কন্ম ? অভিধান, ব্যাকরণ, আর ঐ পঞ্জিকা— ষোলো আনা বুজরুকী আগাগোড়া গঞ্জিকা । মাখন-তোলা দুগ্ধ, আর লবণহীন খাদা, (আর) ভাবশূন্য গবেষণা—একি ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ । ভাবের নামতা ভাবের পিঠে রস তার উপরে শূন্য— ভাবের নামতা পড় মাণিক বাড়বে কত পুণ্য— (ওরে মানিক মানিক রে নামতা পড় খানিক রে ) ডাব এক্কে ভাব, ডাব দুগুণে ধোঁয়া, তিন ভাবে ডিসপেপ্‌সিয়া—ঢেকুর উঠবে চোয়া ( ওরে মানিক মানিক রে চুপটি কর খানিক রে ) চার ভাবে চতুভুজ ভাবের গাছে চড়— পাচ ভাবে পঞ্চতু পাও গাছের থেকে পড় । ( ওরে মানিক মানিক রে এবার গাছে চড় খানিক রে ) যবনিকা পতন শ্ৰীশ্ৰীশব্দকম্পদ্রুম পাত্ৰগণ : হরেকানন্দ । বৃহস্পতি । জগাই। ইন্দ্র। বেহারী । অশ্বিনী। পটলা । নারদ । বিশ্বম্ভর । কাতিক। গুরুজি । বিশ্বকৰ্মা । প্রথম দৃশ্য গুরুজির তাশ্রম ৷ হরেকানন্দ, জগাই, বেহারী, পটলা, বিশ্বস্তুর ও অন্যান্য শিষ্যরা উপবিকট হরেকানন্দ । দেখ জগাই, তুই বললে বিশ্বেস করবি নে— সকলে । কেউ বিশ্বেস করবে না--- হরেকানন্দ । কাল থেকে মনটা আমার এমনি ওলটপালট করছে, সারারাত আর ঘুম হয় নি । দুপুরে একটু তন্দ্রার ভাব এয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ প্রশ্নটা তেড়ে উঠে মনের মধ্যে এমনি গু তো মারলে— জগাই । ওর একটা কবিরেজী ওষুধ আছে খুব ভালো— আয়াপানের শেকড় না বেটে - হরেকানন্দ । দেখ বড় যে বেশি ওপর চালাকি কচ্ছিস, এক কথায় সব কটার মুখ বন্ধ করে দিতে পারি—জানিস। পরস্তু রাত্তিরে গুরুজি নিজে আমায় ড়েকে নিয়ে যে-সব ভেতরকার কথা বলেছেন, জানিস । বেহারী । হ্যারে পটলা, সত্যি নাকি । পটলা ; কিসের ? সব মিছে কথা । বেহারী । এমন মিথ্যে কথা বলতে পারে এই হরেটা-ছিঃ ছিঃ রাম-রাম — বেহারীর সংগীত রাম কহ—ইয়ে রাম কহ বলবেন না আর মশাই গো, মানুষ নয় সব কষাই গো তলে তলে যত শয়তানী—(রাম কহ ) 808 এই কিরে তোদের ভদ্রতা ঘ্যান-ঘান ক্যাচ-ক্যাচ সর্বদা ডুবে-ডুবে জল খাও সব জানি ( রাম কহ ) হরেকানন্দ । প্রশ্ন যখন এয়েছে, জবাব তার একটা আসবেই আসবে- -তা তোমাদের ধমকানি আর চোখরাঙানি, হাসি-ঠাট্টা আর এয়াকি, এ-সব বেশিদিন টিকছে না । বিশ্বস্তর । হা হে, তৰ্কটা কিসের একবার শুনতে পাই কি ? কিই বা প্রশ্ন হল আর তা নিয়ে মামলাটাই বা কিসের ? আচ্ছা, হরিচরণ কি বল ? হরেকানন্দ । হরিচরণ । দেখলি আমায় হরিচরণ বলছে, "হরিচরণ' কি মশাই ? বিশ্বস্তুর । তবে, ওরা যে “হরে”-“হরে’ বলছিল !— হরেকানন্দ হরে বললেই হরিচরণ । ‘ক’ বললেই কাতিকচন্দ্র । জগাই । ওর নাম শ্রীহরেকানন্দ– বিশ্বম্ভর । হরে কাননগু-- হরেকানন্দ । আরে খেলে যা ! তুমি কোথাকার মুখু! হে । বিশ্বম্ভর । আজে, ফরেশডাঙার—আপনি ? হরেকানন্দ । দেখ, এই-যে ছ্যাবলামি জার ডো°ট কেয়ার এ-সব ভালো নয়। কাউকে যদি নাই মানবে, তবে বাপু ইদিকে এসো-টেসো না । , হরেকানদের মৌনাবলম্বন-সাড়ম্বর বেহারী । ( জনান্তিকে ) দেখ পটলা—সেদিন রাত্তিরে একটা স্বপ্ন দেখেছিলুম—কদিন থেকে গুরুজিকে বলব-বলব ড্রাবছি কিন্তু ঐ হরেটার জন্যে বলা হচ্ছে না। দেখলি না, সুকুমার সময় রচনাবলী : ২