পাতা:সেকাল আর একাল.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ १२ ] চরিত্র বিষয়ে বর্তমান বঙ্গসমাজের আর এক অবনতির চিহ্ন, যুবকদিগের অশিষ্ট ব্যবহার । সে কালে যেমন প্রবীন ব্যক্তির সম্মান ছিল, যেমন প্রত্যেক পীড়ায় এক জন করিয়া কর্তা থাকিr তেন সকলেই তাহাকে সম্মান করিভ, সকলেই তাহার বশম্বদ থাকিভ, সেরূপ ভাব এখন দৃষ্ট হয় না । এখন সকলেই স্ব স্ব প্রধান, কেহ কাহাকে মানে না, কেহ কাহার তোয়াক্কা রাখে না । স্বাধীনতার ভাব ভাল ভাব, কিন্তু বয়সের প্রতি, বিজ্ঞতার প্রতি উপযুক্ত সম্মান করা কর্তব্য। ঔদ্ধত্যের ভাব কখনই প্রশংসনীয় হইতে পারে না । যুবকেরা অত্যন্ত মান্য ব্যক্তির বিষয়েও কথোপকথনের সময়—“তিনি” শব্দ ব্যবহার না করিয়া “সে” শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকে ; “করিয়াছেন” শব্দ ব্যবহার না করিয়া “করিয়াছে” শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকে । নিউটন ও বেকনও এই অশিষ্টাচার হইতে অব্যাহতি পান না । কিন্তু আপনার স্ত্রীর প্রতি তাহাদিগকে এরূপ অসম্মান প্রকাশ করিতে কখন দৃষ্ট হয় না। পায়ে পা ঠেকিয়াছে, হয় ইংরাজী শিক্টাচার অনুসারে “বেগ ইওর পার্ডন” বল, অথবা বাঙ্গালী প্রথা অনুসারে “নমস্কার" কর, ইহার কিছুই করে না। রাস্তায় মান্যব্যক্তির সহিত দেখা হইলে, হয় ইংরাজী প্রথা অনুসারে মাথা নোয়াও অথবা বাঙ্গালী প্রথানুসারে নমস্কার কর, কিন্তু কিছুই করা হয় না। তাহার প্রতি এমনি ব্যবহার করা হয়, যেন তাহার সঙ্গে কোন কালে আলাপ নাই । কোন কোন যুবককে গুৰুতর ব্যক্তি যে কেদারায় বসিয়া আছেন, তাহার উপর ইংরাজী কেতা অনুসারে পা রাখিতে দৃষ্ট হয়। অশিষ্টতা ইহা অপেক্ষা অধিক গমন করিতে পারে না ।