পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७ रे স্বদেশ তাহাকে মর্যাদার অাবরণ দেয় না। সে নিজের কাছে হীন বলিয়া যথার্থই হীন হইয়া পড়ে। এইরূপে যুরোপের পনেরো-আনা লোক দীনতায়, ঈর্ষায়, ব্যর্থ প্রয়াসে অস্থির। যুরোপীয় ভ্রমণকারী নিজেদের দরিদ্র ও নিম্নশ্রেণীয়দের হিসাবে আমাদের দরিদ্র ও নিম্নশ্রেণীয়দের বিচার করে ; ভাবে তাহীদের দুঃখ ও অপমান ইহাদের মধ্যেও আছে। কিন্তু তাহা একেবারেই নাই । ভারতবর্ষে কর্মবিভেদ শ্রেণীবিভেদ সুনির্দিষ্ট বলিয়াই, উচ্চশ্রেণীয়েরা নিজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার জন্য নিম্নশ্রেণীকে লাঞ্ছিত করিয়া বহিষ্কৃত করে না। ব্রাহ্মণের ছেলেরও বাগদি দাদা আছে। গওঁীটুকু অবিতর্কে রক্ষিত হয় বলিয়াই পরস্পরের মধ্যে যাতায়াত, মাতুষে মানুষে হৃদয়ের সম্বন্ধ বাধাহীন হইয়া উঠে ; বড়োদের অনাত্মীয়তার ভার ছোটোদের হাড়গোড় একেবারে পিষিয়া ফেলে না। পৃথিবীতে যদি ছোটে বড়োর অসাম্য অবশ্যম্ভাবীই হয়, যদি স্বভাবতই সর্বত্রই সকল প্রকার ছোটোর সংখ্যাই অধিক ও বড়োর সংখ্যাই স্বল্প হয়, তবে সমাজের এই অধিকাংশকেই অমর্যাদার লজ্জা হইতে রক্ষা করিবার জন্য ভারতবর্ষ যে উপায় বাহির করিয়াছে তাহারই শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করিতে হইবে। y^*\ যুরোপে এই অমৰ্যদার প্রভাব এত দূর ব্যাপ্ত হইয়াছে যে, সেখানে এক দল আধুনিক স্ত্রীলোক, স্ত্রীলোক হইয়াছে বলিয়াই লজ্জাবোধ করে। গর্ভধারণ করা, স্বামীসস্তানের সেবা করা, তাহারা কুষ্ঠার বিষয় জ্ঞান করে । [মাহুষই বড়ো, কর্মবিশেষ বড়ো নহে ; মনুষ্যত্ব রক্ষা করিয়া যে কর্মই করা যায় তাহাতে অপমান নাই ; দারিদ্র্য লজ্জাকর নহে, সেবা লজ্জাকর নহে, হাতের কাজ লজ্জাকর নহে ; সকল কর্মে সকল অবস্থাতেই সহজে মাথা তুলিয়া রাখা যায়—এ ভাব যুরোপে স্থান পায় না |সেইজন্য সক্ষম অক্ষম সকলেই সর্বশ্রেষ্ঠ হইবার জন্য সমাজে প্রভূত নিস্ফলতা, অস্তহীন বৃথা কর্ম ও আত্মঘাতী উদ্যমের স্থষ্টি করিতে থাকে। ঘর বাট