পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিলন-রাত্রি রাজা বলিলেন,--“তা ঠিক, সে ভার আপনার উপরই থাকৃ।” এই বলিয়া রাজা পুনরায় অস্ত্রাধ্যক্ষকে লক্ষ্য করিয়া কহিলেন,—“সন্তোষ ত আহত, অন্ত সহকারী কেহ আপনার সহিত এথানে এসেছেন ?” “এক জন ত রাজা বাহtছরের সঙ্গে অাগেই কলকাতায় অাসেন--” রাজা ধৈর্য্যবিচু্যতস্বরে কহিলেন,—“সে কথা আমার মনে আছে, কিন্তু আমার ত মনে হয়, দুই জনের অধিক সহকারী রাজ-সরকার থেকে বেতন পেয়ে থাকেন ?” অধ্যক্ষ শুষ্ককণ্ঠে ঢোক গিলিয়া জড়সড়ভাবে উত্তর করিলেন,--“আজ্ঞে ই, তিনি হাজির আছেন —কিন্তু—” কৃষ্ণনাথের বক্তব্য শেষ না হইতেই রাজা দৃঢ়স্বরে কহিলেন,-“এ সম্বন্ধে তার বক্তব্য কি, আমি শুনতে চাই-তা’কে ডাকা হোকৃ।” কৃষ্ণনাথ ইহার পর আর দ্বিতীয় কথা কহিতে সাহস করিলেন না । অল্পক্ষণের মধ্যেই তৃতীয় সহকারী জহরলাল পাত্র রাজসমীপে আধিয়া অভিবাদনপূর্বক দাড়াইলেন। সপ্তম পরিচ্ছেদ রাজা প্রত্যভিবাদনপুৰ্ব্বক জহরলাল পাত্রকে কহিলেন,—“এত অস্ত্র চুরা গেল, আর আপনার কেউ কিছু জানেন না ?” পাত্র মহাশয় আস্তে আস্তে দুই একবার কাসিয়া গলাটা সাফ, করিয়া লইয়া অবনতমুখে, ভীতকণ্ঠে কহিলেন,—“ধৰ্ম্মাবতার, আমি সে সময় ছুটতে বাড়ী গিয়েছিলাম।” রাজা অস্ত্ৰাধ্যক্ষের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন,—“কই আমাকে ত সে কথা জানানো হয় নাই ? আপনি ছুটী দিয়েছিলেন ?” উত্তর হইল, "না, এ রকম ছোট-খাট বিষয়ে সন্তোষই আমার হয়ে কাজ করে ।” “সন্তোষ আপনাকে ছুটী দিয়েছিল ?” জহরলাল রাজ-প্রশ্নের উত্তরে কহিলেম,—"আঞ্জে 线11” “কৰে ফিৰূলেন প্রসাদপুরে ?” “চুরী প্রকাশের পরদিন। রওয়ানা হয়েছি।” فمـســؤية ফিয়েই কলকাতায় Sፋ “ত হ’লে চুরীর বিষয় বিশেষ কিছুই জানেন না আপনি ?” “না, ধৰ্ম্মাবতার।” “তবে আর অtপনার এখানে থাকার প্রয়োজন নেই।” জহরলাল ধেন এতক্ষণ গভীর জলের মধ্যে হাবুডুবু থাইতেছিলেন, সহসা মুক্তিলাভ করিয়া উদ্ধশ্বাসে ছুট দিলেন । যাইবার সময় রাজাকে নমস্কার অভিবাদন করিতে পর্য্যন্ত ভুলিয়া গেলেন । রাজাবাহাদুর কণ্ঠগিত হাস্ত সবলে দমন করিরা দেওয়ানকে কহিলেন,—“এইবার হরিরাম সর্দারকে ডাকা হউক।” হরিরাম আসিয়া তাহার বশীসংযুক্ত লাঠি রাজপদতলে রাখিয়া ভূমিষ্ঠ-প্ৰণামপুৰ্ব্বক উঠিয়া করষোড়ে দাড়াইল । রাজা কহিলেন,—“হরিরাম, তুমি দেখছি খুবই অসমর্থ হয়ে পড়েছ—-তোমার চোখের উপর দিয়ে এতগুলা হাতিরীর চুরী গেল, আর তুমি কি না দেখতেই পেলে না ?” হরিরামের চোখ জলে ভরিয়া উঠিল, বাল্য হইতে রাজসরকারের কার্য্যে সে জীবনপাত করিতেছে, কিন্তু এমন দুনামভাগ আর কথন ও হয় নাই। সে রুদ্ধকণ্ঠে কহিল—“ধৰ্ম্মাবতার, ভয়ে কব-না নিৰ্ভয়ে কব ?” রাজা কহিলেন,--"নিৰ্ভয়েই কও ” করষোড়ে সে উত্তর করিল,- “এ সব রায়মশায়েরই ষড়যন্ত্র, ধৰ্ম্মাবতার ! আtর ‘সইকারী” যিনি হইছেন—তিনি তেনার চর।” "এ রকম তোমার মনে হয় কেন ?" “ঘত রণজ্যির চেনা অচেনা ‘ছালে’ পাঠশালায় ঢোকে, হাতিয়ারশালায় মজলিস করে—মুই রোজ দুই চক্ষে দেহেছি। ধৰ্ম্মাবতার ভাবিলেন, মুই কাণা হইছি —তা হই নাই,-ধৰ্ম্মবতার। মুই পই পই এ কথা কয়ে আসছি—তা কানে নেয় না তেনার, ধৰ্ম্মবতীর * কৃষ্ণনাথ এবার নির্ভীক সবলকণ্ঠে হরিরামের প্রতিবাদ করিয়া কছিলেন,—“মিথ্যা বলছে ধৰ্ম্মাবতার ? অামাকে কোন দিন এ কথা জানায় নি।” হরিরাম কহিল,—"তোমারে না – তানারেওগো তানারে - তোমার সইকারীকে জানাইছি! তোমারে কইব কি, কইতে তিনি কি স্বালে ; নী তোমার এক দিন দেখা পাইছি। তুমি ত তেমার হাতে সব সমৰ্পণ করি ঘুমতে নেগেছিলে ।” এ সত্য কথার প্রতিবাদ তিনি কি করিবেম,