পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sసిశి বাহুল্য দেখা যায়। কারণ স্বল্পতর অতিথির তুষ্টিসাধন পক্ষে বহুবাড়ম্বর লঘু আয়াস-সাধ্য। এ ক্ষেত্রেও অন্তঃপুরিকাগণ শুiমীচরণের নিষেধ সত্ত্বেও ভূমি আয়োজনের কিছুমাত্র ক্রটি করেন নাই। রৌপ্যখালের তিনদিক ব্যাপী সুবিস্তৃত ব্যঞ্জন ও মিষ্টান্নপাত্রের সকল স্তরে নাগাল পাওয়া দীর্ধহস্ত রাজার পক্ষে ও দুঃসাধ্য হইয়া উঠিয়ছিল। দিদিম। কাছে বসিয়া দূরের বাটিগুলি উহার হাতের নিকটে ধরিয়া দিতে দিতে সকল ব্যঞ্জনষ্ট একটু একটু চাকিবার জন্ত যুদ্ধস্বরে অনুরোধ করিতেছিলেন । রাজা যেটি থাইয়া বিশেষ পরিতোষ প্রকাশ করিতেছিলেন, সেটি ঘে হাসিরই প্রস্তুত, ইহাও অসঙ্কোচে রাজাকে জানইয়া দিতেছিলেন ; আর হাসি দিদিমার প্রতি ক্রুদ্ধ কটাক্ষ নিক্ষেপ করিয়াও রাজার প্রশংসা বেশ হাস্ত মুখেই আত্মসাৎ করিতেছিল। এ বাড়ীর এই দস্তুর, ভাল রান্নাগুলি মা দিদিমা দু’জনেই হাসির নামে চালাইয়া অধিকতর পরিতৃপ্তি লাভ করেন। কথোপকথনমুখে বঞ্চিত হাসির মাতা দূরে বসিয়া মুক-বধিয়ের ন্তায় অতিথি-দর্শনমুখেই আপনাকে ধন্ত জ্ঞান করিতেছিলেন । রাজা দক্ষিণ হস্তে সদাসৰ্ব্বদা বহুমূল্য দুইটি হীরক-অঞ্জুরী ধারণ করিতেন । তিনি যখন পত্র হইতে পাত্রাস্তরে হস্তচালনা করিয়া ব্যঞ্জন গ্রন্থণ করিতেছিলেন, তখন সেই অজুরী দুইটির জ্যোতিঃ তারক্ষাজ্যোতির ন্তায় ঝলমল করিয়া উঠিতেছিল। গৃহিণী একবার রাজার মুখের দিকে একবার তাহার হাতের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে করিতে ভাবিতেছিলেন, ঠিক যেন কোন ছদ্মবেশী রাজপুত্তর ! হাসির যদি এই রকম একটি বর হয় ! ঠাকুরজামাই একে “কি - গোপনে ক’নে দেখাইতেই এনেছেন না কি ? তাই যেন হয় বিধাতাপুরুষ ।” গৃহিণী যখন এইরূপ তপস্তা করিতেছিলেন, তখন হাসি নিবিষ্টচিত্তে অতিথির আহার সৌষ্ঠব দেখিতেছিল। কিরূপ ধীরে ধীরে স্বল্পমাত্রায় তিনি আহার্য্য মুখে গ্ৰহণ করিতেছেন । মুখে হাত উঠাইবার কি সুচারু ভঙ্গী ! আহার্য্য মুখে লইবার পর ওষ্ঠাধর নিমীলিত হইয়া পড়িতেছে, চৰ্ব্বণে শব্দ নাই ; হস্তলেহনের বিকৃত দৃপ্ত নাই! আহার-ক্রিয়ার মধ্যে এতটা সৌন্দৰ্য্য যে লুক্কায়িত আছে-ইতিপূৰ্ব্বে ইহা তাহার নজরে কখনো পড়ে নাই ত ! অন্ন-ব্যঞ্জন ত্যাগ করিয়া রাজা যখন মিষ্টান্নে হস্ত দান করিলেন, তখন শু্যামাচরণ বলিলেন, “জানেন -ब्रां-ब्रl--ब्रांब्रम*ां★, ७ ५:फ़ौद्ध भि४ि cश्वद्रण श्रांब्र স্বর্ণকুমারী দেবী গ্রন্থাবলী কখনও ভুলতে পারবেন না ; চিরদিনই মুখে সে মিষ্টত লেগে থাকবে ।” রাজা বলিলেন, “সে ত উত্তম কথা। এভ রকম মিষ্টান্ন রয়েছে এখানে, কোনটি আগে নেব ব’লে দিন ত, আমি এ সম্বন্ধে বড়ই অজ্ঞ ।” শুfমাচরণ বলিলেন, “আমি ত খাচ্ছি সরভাজা ।” দিদিমা অনুনয় করিয়া কছিলেন,"সবই একটু ক’রে চেকে দেখ বাছ,-মইলে আমাদের দুঃখ হবে * কৃষ্ণলাল বলিলেন, “মালাইভোগটা মা ওঁকে আগে দাও । তোমার এত মিষ্টান্ন কি একসঙ্গে লোকে খেতে পারে । পরে বরঞ্চ সঙ্গে ওঁদের কিছু দিও " রাজা কহিলেন, “হ্যা, তা হ’লে বিদায় দক্ষিণটাও বাকী থাকে না ?” ইতিমধ্যে হাসি মালাইভোগের বাটিগুলি তিনজনের পাতের কাছে ধরিয়া দিল। শুiমাচরণ খাইতে খাইতে বলিলেন, “বড়ই উপাদেয় হয়েছে—তুমি তৈরী করেছ বুঝি মা ?” হাসি একটু হাসিল, দিদিমা তাড়াতাড়ি বলিলেন, "র্হ্যা, হাসিই করেছে ওটা।” এবার দিদিমা সত্য কথাই বলিলেন ; এ ঞ্জিনিযটা সম্পূর্ণভাবেই হাসির হাতের প্রস্তুত । কারণ, ইহাতে রন্ধন-কাৰ্য্য কিছুই ছিল না, মালাই, ক্ষীর, ছান, রস প্রভৃতি সংযোগে ইহা একটা কেমিকেল উপাদান মাত্র। রাজা খাইয়া বলিলেন, “যিনি এর স্বগুণ নাম দিয়েছিলেন, তিনি নিশ্চয়ই দিব্যদর্শক ছিলেন ।” এইরূপ বিনাড়ম্বর সহজ হাসি-গল্প আদর-আপ্যায়নে অতিথি এবং আতিথ্যকারী উভয়পক্ষই যথোচিত আনন্দ লাভ করিলেন । আহারের পর দিদিমা হাসিকে লইয়া বিদায় গ্রহণ করিতে উপ্তত হইলে শু্যামাচরণ তাহাতে আপত্তি প্রকাশ করিলেন ; কৃষ্ণলাল সেই আপত্তি গ্রাহ করিয়া মাতাকে টানিয়া আনিয়া বড় চৌকিখানার উপর বসাইপ্পা দিলেন । হাসি পাশে বসিল । শুামাচরণ র্তাহাদিগকে লইয়া বিদেশী পণ্য বল্পকট সম্বন্ধে গল্প ফাদিয়া বসিলেন আর রাজা কৃষ্ণলালের সঙ্গে পুনরায় দেয়ালের চিত্ৰলেখ্যগুলি দেখিতে লাগিলেন । বড় দরজার মাথার স্থচিকাৰ্য্য-রচিত ওঁ শব্দটি প্রথমেই কৃষ্ণলাল র্তাহাকে দেখাইলেন,—রজার প্রশংসা শুনিতে পাইলে পর তিনি ইহার অর্থ-ব্যাখ্যার প্রবৃত্ত হইতে পায়েন । কিন্তু তাহাকে নিরাশ করিয়া অতিথি আর একখানি ছবি মনোনিবেশ সহকারে দেখিতে দেখিতে কহিলেন, “এই ছবিখানি দেখিতৃে