পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२&रै ইংরাজের সহিত স্বরেন্দ্র-প্রসঙ্গ কিছু কাল পূৰ্ব্বে দেশনায়ক মুরেন্দ্রনাথকে লইয়া এক জন ইংরাজের সঙ্গে আমার বেশ একটু বচসা इहेभ्रांछ्ठि ! ইংরাজ-মওলী আজকাল মুরেন্দ্র বাবুকে মডারেট বলিয়া খাতির করেন । কিন্তু তখনকার দিনে ইহাদের মতে তিনি ছিলেন এক জন ঘোর Extremist, এমন কি, ইহাকেই তাহারা বিদ্রোহিতার প্রধান প্ৰবৰ্ত্তক বলিয়া মনে করিতেন । সে দিন সে ইংরাজটির তৎপ্রতি বিদ্বেষ-বিষবর্ষিত বাক্যে আমার সৰ্ব্বাঙ্গ জলিয়া উঠিয়াছিল. অথচ তাহার সেই জালাময় সমালোচনার মধ্যে বেশ একটু কৌতুকও অনুভব করিয়াছিলাম। তখন আমি "ভারতীর" সম্পাদক ছিলাম । সম্ভবতঃ কোনও এক দিন এই বাদামু বাদ "ভারতী’রই কাযে লাগিয়া যাইবে, এই মনে করিয়া সে দিনের কাহিনী তখন খাতায় টুকিয়া রাখিয়াছিলাম, কিন্তু পরে আর তাহ ছাপাইবার অবসর ঘটিয় উঠে নাই। আজ এত দিন পরে দেখিতেছি, সে কথা প্রকাশের ঠিক সময় আসিয়াছে। ভারতে জাতীয়তা উদ্বোধনের যিনি আদিগুরু, তাহার স্কৃতিকল্পে শ্রাদ্ধতপণস্বরূপ সেই কাহিনী আজ নিম্নে বিবৃত করিতেছি। সেই সময় মাণিকতলার বিদ্রোহী দলের বিচার চলিতেছিল। খুদিরামের সবেমাত্র ফাসী হইয়। গিয়াছে। সেই বিপ্লবযুগে আমি এক দিন এক জন ইংরাজ-মহিলার বাটীতে চা-পানের নিমন্ত্রণ রক্ষণ করিতে গিয়াছিলাম। তাহার স্বামী ছিলেন একখানি সচিত্র পাক্ষিক কাগজের প্রোপ্রাইটর। আমার ছোট ছোট গল্প মধ্যে মধ্যে র্তাহাঞ্জের কাগজে প্রকাশিত হইত। সেই স্বত্রেই তাহাদের সহিত আমার আলাপ-পরিচয় । চা-পানের পর মিসেস পি সপ্তপ্রকাশিত কাগজথামা আমাকে দেখিতে দিলেন । প্রথম পাতাখানা উণ্টাইবামাত্র দেখিতে পাইলাম, খুদিরামের ছবি । ছবিখানি দেখিয়া অসতর্কভাৰে হঠাৎ বলিয়া উঠিলাম, খুব ত তালমামুৰী নরম চেহারা ! আহা, দেখিলে মায়া করে ” মিঃ পি বলিলেন, “কিন্তু কায যা করেছে, তা ত একটুও নরম নয়।” আমি । তা সত্য । তবে স্ত্রীহত্যার অভিপ্রায়ে স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী সে কিন্তু এ কায করে নাই। কিংবা তার হাতেই যে খুনটা হয়েছে, এমনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া যে রকম তার কচি বয়স, এই বিবেচনায় গভর্ণমেণ্ট যদি তাকে ফাসী না দিয়ে নিৰ্ব্বাসন-দণ্ড দিতেন, তবে আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যতে তার জীবনের ধারা একেবারেই উণ্টে যেত। মিঃ পি বলিলেন, “আমার মতে সঙ্গে সঙ্গে দলপতিদের লটুকে দিলেই ঠিক হত। এ সকল কার্য্যের জন্ত আসলে দায়ী তারাই ।” আমি তাহার কথার কোন উত্তর না দিয়া পাতাগুলি উণ্টাইয়া যাইতে লাগিলাম। দুই একখানা পাতার পরই নজরে পড়িল স্বরেন্দ্র বাবুর ছবি। সবিস্ময়ে বলিয়া উঠিলাম, “এ কি ! মুরেন্দ্র বাবুও যে এখানে ?” মিঃ পি। তিনিই ত যত নষ্টের গোড় । তিনিই ত ছেলেদের এ সকল কাযে উত্তেজিত করে তুলেছেন । আমি উত্তেজিতভাবে বলিয়া উঠিলাম, “কি বলছেন আপনি ? তিনি ছেলেদের দেশানুরাগধৰ্ম্ম শিখিয়েছেন বটে, কিন্তু বোমা ফেলতে বা গুপ্তহত্য করতে ত শেখান নি । বিদ্রোহিতার পক্ষপাতী তিনি একেবারেই নন। তিনি একান্তই মডারেট ।” মিঃ পি অবিশ্বাসের হাসি হাসিয়া কহিলেন, “মডারেট ! তিনি পাক্কা Extremist । যখন বিপিন পালের দল তাকে ছাড়িয়ে উঠলো, তখনই তিনি Moderate সাজলেন । লোকটা ভারী biotis (clever) " আমি । মডারেট বা Extremist দলের মধ্যে বিশেষ কি প্রভেদ, তা আমি জানি না। তবে দেশাত্মবোধ প্রচার করাই যদি চরমপন্থীবাদ হয়, তবে ইহাকেই যথার্থ আদিগুরু বলা যায়। আর খুন-জখম করাই যদি চরমপন্থীর কায হয়, তা হ’লে ইনি একান্তই মডারেট । কিন্তু মিঃ পি কিছুতেই তাহার খুয়া ছাড়িলেন না। খুব জোরের সহিত বলিলেন, “নিশ্চয়ই তিনি extremist. Extra extremist Wołł wifভাবেই এখন তিনি মডারেট নাম নিয়েছেন। যেমন ইংলওে প্রথমে Liberal নামধেয় দলকে যারা ছাড়িয়ে উঠলো, তার দাঁড়াল Radical ; এ শুধু একটা নামের ঘোরফের। আসলে সব হাঙ্গামার মুল হচ্ছেন ইনি—এই স্বরেক্স ব্যানার্জি। বরিশালের যে গোলযোগ ঘটে, সেও এরই জন্ত । ইনি ছেলেদের ক্রমাগত এই শিক্ষা দিচ্ছেন যে, সমস্ত বাধাৰিয়