পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o স্বর্ণকুমারী দেবীর-গ্রন্থাবলী রাজা উজানে দাড় পশ্চাতে টানিয়া তপঃপনা ফিবাষ্টয়া লইয়া সকৌতুকে কছিলেন,- “কিস্থ কি ? ব’লে ফেলো, শোনাই ধাক ৷” অতৃলেশ্বরের কথাবার্তায় অঙ্গ গা স্থার্য্য ছিল না, হাস্তকৌতুকপূর্ণ প্রতিভাবে তিনি বালিকা হাসিরও মনে সখ্যম্ভাব ফুট। ইয়া গুলিতেছিলেন । হাসি রমণীগুলভ প্ৰগলভভাবেই পক্লসের মনোমোহন বেশ একটু চপল গসি হাসিয়া কহিল,- “কিন্তু আপনার রাণী স্থন আসবেন - “ রাজা সহসা উচ্চ হাসি গুলির বলিলেন, - “ভাববার কথা বটে কপাট আগে মনে হয় নি । কি বলা যাবে— গষ্ট ত ! তুমিই একটা নাম ঠিক কর না ?” কাসি বলিল, -“তঁাকে বউরাণী বলবেন ।” “দেশ ! তোমার যদি ঐ নাম পসন হয় ত তাই হবে ।” রাজার দৃষ্টিতে, রাজার স্বরে সহসা হাসি এই কথার মধ্যে একটা যেন লুকান অর্থ দেখিতে পাইল । এতক্ষণ সে না ভাপিয়া না চিন্তিয় বেশ সহজ ভাবেই কথা কহিয়া যাইতেছিল—সহসা লজ্জিত হইয় পড়িল । সে ভাব ঢাকিতে গিয়া পুর্বের কথারই আবৃত্তি করিয়া কহিল,—“কি যে বলেন আপনি- ” “কিছু কি দোষেপ কথা বলেছি, হাসি ?—“ “আপনি যে রাজা—" “এই আমার অপরাধ ? যদি ভিখারী হই - “ দূরে গান উঠিল— "ভিখারীব শূন্ত ঝোণা,—রইল তোলা হলো না – পরে যাওয়৷ ” উভয়ে চমকিয়া উঠিলেন। রাজা বলিলেন,—“গলাটা যেন চেন চেন মনে হচ্ছে ।" হাসি বলিল,-“ঠিক যেন কোন অপরিচিত পার্থীর পরিচিত শিস ।" তীর হক্টতে রাজকুমারী ডাকিলেন. —“বাব !" হাসি আনন্দের স্তরে কহিল, -- রাজকুমারী গাচ্ছিলেন না কি ?--আর আমরা কেউই বুঝতে পার্লুম না কি আশ্চর্য্য!” অল্পক্ষণের মধ্যেই নৌকা শীবে লাগিল। রাজা বলিলেন,- “আসবে, রাণী, নৌকায় ? আমরা তোমার জন্তে অপেক্ষা কবছি ।” কথাটা কি পুর্ণ সত্য ! শ্যামাচরণ এই সময় কাসির পাশে আসিয়া দাড়াহয়। বলিলেন,—“রাজাবাহাদুর, শরৎ এসেছে এইমাত্র প্রসাদপুর থেকে । আপনাকে একবার আসতে হবে, অনেক কথা আছে ।” সপ্তদশ পরিচ্ছেদ হাসি ডাকিল, “শরদী—-” হাসি বাড়ী যাইবার সময় রাজকুমারীর আদেশে অtজ শরৎকুমার ত চার সহযারিরূপে মোটরের সম্মুখ-পিট গ্রহণ করিয়াছিলেন। মোটর চলিতেছিল নদীল ধার দিয়া-- অপেক্ষাকৃত ধীব গতিতে । জলের উপর ছোট-বড় জাহাজের এলো-মেলো বিশুঙ্খল আলোকরাশি, আর তীরদেশে সমসজ্জিত স্তম্ভাবলীর স্ববিদ্যস্ত আলোকগুচ্ছ নক্ষত্রজ্যোতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতীয় অহিলান করিয়া সগৰ্ব্বে বিদ্যাদীপ্ত বিকীর্ণ করিতেছিল । কিন্ত স্থায় রে । কোন দর্প এমন ছিদ্রহীন, যাহার মধ্যে দর্পহাবীর প্রবেশপথ রুদ্ধ ? অণকাশের ক্ষীণ চন্দ্র সে আহবানে মৃত্যুমন্দ হাসিয়া মেঘের মধ্যে টলিতে টলিতে সন্মোচন-বাণ নিক্ষেপ করিয়াছেন, মৰ্ত্তোর অত্যুজ্জল আলোকপুঞ্জ সেই শানাভ আলোকে মুগ্ধ স্তম্ভিত, তাহীদের অণু-পরমাণতে আত্মলোপের বিনীত মধুরতা । জলে-স্থলে কি অপুৰ্ব্ব শোভা । দশক শরৎকুমারের মনে জ্যোৎস্নামিলিত এষ্ট তড়িদ্দীপবলীর শোভা ভক্তিমণ্ডিত শক্তির মহিমা ব্যক্ত কবিতেছিল। হাসির ডাকে তিনি জানাল হইতে মুখ ফিরাইলেন । তাছার দিকে সহস্তে দৃষ্টিপাত করিয়া হাসি কহিল,--“শরদ - বড় আহলাদ হচ্ছে ।” শরৎকুমারের ইচ্ছা হইল, জিজ্ঞাসা করেন— “কেন । ” কিন্তু তাতার মুখে আজি কোন কথ। ফুটিতেছিল না,–আবশ্বকও হইল না ; তাহার নীরব কৌতূহল নিবৃত্তি করিয়া বিনাপ্রশ্লেষ্ট হাসি আপন বক্তয্যের অবতারণা করিয়া কহিল,— “শরদাঁ, আমি ত প্রায় রোজই আপনাদের অঞ্চলে যাক্ট, এতদিন পরে আপনার দেখা পেলুম। আপনি দেখছি, একেবারেই ভুলে গেছেন।” বাজকুমাবীব সহিত গুরুগম্ভীর তত্ত্বালোচনা সহজ, কিন্তু হাসির হাসিমাখা সরলতাপূর্ণ মনটান প্রশ্নে শরৎকুমার বরাবরই বালকের ন্যায় কুষ্ঠিত হইয় পড়েন । আজ তিনি একেবারেই নিৰ্ব্বাকৃ হইয়া গেলেন। যাহাকে এক সময় পরিপূর্ণ প্রাণে