পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Հ হচ্ছে, শরদ । প্রত্যাশালীন ভালবাসা বুঝি ভালবাসা নয় ? শুই হচ্ছে আসল প্রেম | নিরাশ হবারও কোন ত কারণ দেখিনে শরদাঁ । ‘পত্যশিীগুলোই বরঞ্চ প্রায়ই বিফল হয় আর অপ্রত্যাশিত আশাই পেশীর ভাগ সফলতা লাভ ক৭ে,-- এই ত সংসারের মজা ! বুঝলেন ও 7 রাজকুমারী যে আপনাকে ভালবাসেন –সে বিসয়ে গ1মীর মনে গণেইমাত্র নেই । ঘটক লিটার মাত্ৰ অভাব । আচ্ছ, আমি এখন সে ভার নিচ্ছি ; দিন স্থির ক’রে ফেলি । কি বলেন ?” শরৎকুমার হাসিব এষ্ট কথায় ব্যতিব্যস্ত হইয়া উঠিলেন ; মৰ্ম্মান্তিক অনুরোধ সহকারে কছিলেন, “হাসি, আমার ইচ্ছা নয়—এ বিষয় নিয়ে তুমি কারও সঙ্গে আলেtbন করো । আমি তোমাকে এখন যা বল্লুম, এ স্মামার নিতুত পাণের কথা । তুমি কথা দী ও, ঔ।সি এ কথা নিয়ে আর নড়াগিল্ড করবে না ?” “বেশ, আচ্ছা, কথা দিলুম আমি রাজকুমারীকে বলল না, -যে, এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আমার কোন কথা হয়েছে ; কিন্তু আমি শুধু বিয়ের প্রস্তাবটি--” "al, চাসি, না তোমাকে এ সম্বন্ধে একেবারেই মৌন থাকতে হবে,—তুমি কিছু বলতে পাবে না-আমি বিয়ে কর্দষ্ট না ।” “যদি রাজকুমারী ইচ্ছা করেন ? - তবুও না ?” “তবুও না, এ বিয়ে ষ্ট’তেই পারে না ।" অবশ্য হাসিকে নিবস্ত করিবার জন্য শরৎকুমার যেন-তেল-প্রকাবে- এ কথাট। উড়াইবার চেষ্টা করিলেন । হাসিকে নীরব করিবtল তিনি অন্য উপায় দেণিলেন না। কিন্তু ফণ র্তাহীর মনের মত হইল না | হাসি গম্ভীর হইয়। কহিল, "cবশ, আপনি যদি বিয়ে না করেন গুপে আমিও করব না ।” হাসির স্বর দৃঢ় পতিজ্ঞাব্যঞ্জক ! এ প্রতিজ্ঞ যে যথাসময়ে শিথিল গুইবে - তাহ শরৎকুমার জানিতেন, কিন্তু তবুও ত বণিতে পারিলেন না- “আচ্ছা বেশ, সেষ্ট ভাল--” তিনি সস্নেহ ভ২ সনাক্স কহিলেন---“কি যে বল, হাসি।” “হ্যা, আমি ঠিকই বলছি—আপনি যদি না বিয়ে করেন, তবে আমিও করব না ।” তিনি একটু রহস্তের ভাবে কহিলেন,—“কেন, অামাকে জব্দ করার জন্ত ?” স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী “বেশ তাই—” "অiমাকে অমুখী ক’রে তুমি মুখী হবে ?” “আপনিও ন্ত আমাকে অমুখী ক’রে মুখী গুচ্ছেন ?” “বাজে তর্ক রাখ, হাসি, তুমি বেশ জান— তোমার সুখ আমার সাধনার একটি বিষয় ।” হাসি চুপ করিয়া গেল—সে ত প্রত্যুত্তরে বলিতে পারিল না—আপনার মুখও আমার জীবনের সাধনা ৷ অন্ততঃ এ কথা ত সে অসঙ্কোচে বলিতে পীরিত যে, “আপনার মুখেও আমি একান্ত মুখী”-- কিন্তু শরৎকুমারের ঐ গুরুগম্ভীর সজোর কথার পর তাহার মনের সমস্ত ভাবই কেমন লঘু বলিয়া মনে হইতে লাগিল, সে চুপ করিয়া রহিল। শরৎকুমার বলিলেন, “আমি যদিও বেশ জানি যে, আমাকে ব্যথা দেবার জন্তই তুমি ও রকম কথা বলছ, কিন্তু কোনো ভাবেই বা ক্ষণিকের জন্তও ও কথাটা তোমার মনে আনা ঠিক হয় নি।" "ক্ষণিকের জন্ত ?” “নিশ্চয়ই । রাজা বাহাদুর তোমাকে মনোনীত করেছেন, আর তুমিও মনে মনে যে তাকে বরণ ক'রে নিয়েছ—ত!—” হাসি লজ্জিত হইল, কিন্তু বেশ জোর করিয়াই বলিল - “আপনি সবজান্ত । ভুল ভুল—সব ভুল— দেখে লেবেন । -- “ “কি বলছ হাসি ? তোমার এ কথা শুনলে রাজকুমারীর মনে কত দুঃখ হবে ভাব দেখি।” “ত কি করব ।” “তুমি বেশ জান, তোমার বাপ-মা এ বিবাহের জন্য কত উৎম্বক, তোমার মুখে এ কথা শুনলে তারা কত ব্যথিত হবেন ।” “তা কি করব।” “না, হাসি, অমন ক’রে বলে না তুমি। বুঝছ ন। কি এতে আমারও মনে কিরূপ কষ্ট দিচ্ছ ? জানি, হাসি, এটা তোমার মনের ভাব নয়, মুখের কথা, তবুও বল, হাসি, বল, ওরূপ কথা কখনও আর মুখেও আনবে না ?” হাসি চুপ করিয়া রহিল--বিদ্রপ করিয়া কি বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু তাহার ছঃখস্নান গম্ভীর মুখের দিকে চাহিয়া সে কথা বলিতে পারিল না। শরৎকুমার আবার বলিলেন,—“জান না, হাসি, যে দিন থেকে শুনেছি আমি, রাজা বাহাদুরের সঙ্গে তোমার বিবাহ ঠিক হয়েছে, সে দিন থেকে আমার মনের খুব বড় একটা অন্ধকার কেটে গেছে।