পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ぐり কাছে চাই আমরা— যাতে আর ‘তুলক্রমে যাবার দরকার না থাকে । সত্যি বলছি, বিন্ধু মি 1ে, পুলিসখুন বা ইংরাজ-খুন করতে মনে পাপ পায় না , কিন্তু নিরীহ দেশের লোকের সর্বস্ব অপহরণ কবতে বেশ একটু কষ্ট পেতে হয়।” “কষ্টের কথা এখন বথি । সে কায আমরা ধরেছি, তা'তে এ রকম কষ্ট জলের মত তজম করতে হবে । রাজা বাহাদুরের কাছে এপন যা ; গিয়ে মোটা রকম একটা চাদ। আদায় ক’রে আন।” এই কথাবার্তার ফল কি হইল, পাঠক জানেন । হয় রে মামুধের সঙ্কোচ : অধিক স্থলেই ইহা ম্যাকবেথের দুর্বলতা মাত্ৰ ! বিজন রায়ের উপদেশ সবল শক্তিরূপে তাহার কৰ্ম্মযোগের মূলে অধিষ্ঠিত হইবামাত্র সন্তোষের মনের সমস্ত বাধা-সঙ্কোচ দুর হইল। তথন রাজার কেফৰ্ম্মে জাল সহি করিতে সে বরঞ্চ বেশ একটা আত্মপ্রসাদই অনুভব করিল। 兴 용 흉 其 흉 পরদিনই সস্তেlয জাল চেকপীন বিজনকে ভাঙ্গাইবার জন্য দিতে আসিয়া শুনিল, বিজন কলিকাতায় গিয়াছে। কিন্তু ফিরিয়া আসিয়াও মুক্তন-পুত্র সে চেক গ্রহণ করিল না । অস্তীর্থ ধরি মাছ না ছুই পানি । কোনো এক দিন যে এই চেক-রহস্তের তদন্তে সহর গুলজার হইবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। অতএব চেক ভাঙ্গাইবার ভারও পড়িল সন্তোষের উপর । সস্তোব সে ভlর ধাড় পাতিয়া লইয়া আপাততঃ লাইবেরী ঘরের গুপ্ত দেরাজের মধ্যে চেকখানাকে আশ্রয় দান করিণ। অতুলেশ্বর কলিকাতা যাইবার পর কোন ওজরে দাদার নিকট হইতে ছুটী আদায় করিয়া কলিকাতায় যাইয়। চেক ভাঙ্গাইয়া লইবে, এই রহিল তাঙ্গর মতলব । কিন্তু রাজা চলিয়া যাইবার পরেই সে অস্ত্রচুরীর কাযে হাত দিয়া, সফলতার আনন্দে একরূপ উদভ্ৰান্ত হইয়া উঠিল । প্রতিদিন শনৈ: শনৈঃ অস্ত্রাগার মস্থিত হইতেছে,অথচ তাহাকে বাধা দিবার কেহ নাই- এই অপ্রতিহত বিজয়লাভের নেশায় পড়িয়া কলিকাতাযাত্রার দিনটাকে সে ক্রম’গতই পরদিনের কোটায় ফেলিতে লাগিল । কিন্তু নেশায় মাতিয়াও সে বন্ধুর উপরোধ ভুলে নাই । অদ্য কোন অস্বে হাত দিবার পূর্বে প্রতিদিনই সে প্রথমে একবার ধনুকটা নাড়াচাড়া করিয়া দেখে, কিন্তু উ:, কি ভারী ! অহা কাচারও সাহায্য না পাইলে ইহাকে নড়ান সরান যে একরূপ অসম্ভব, —কার্য্যে প্রবৃত্ত হইতে গিয়া তাই সে বেশ বুঝিল । স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী অথচ বিজন এ কার্য্যে তাহার দোসর হইতে চাহে নী ; অন্ত একটিমাত্র সেবাধারীকে সে জানে, যাহার সাহসের উপর একান্তভাবে সে নির্ভর করিতে পারিত---কিন্তু সে এখন এখানে নাই, গুরুর আহবানে অন্তক্ৰ সমিতিগঠনে গিয়াছে। তাহার প্রত্যাগমনের অপেক্ষীয় স্বজন রায়ের আদিষ্ট স্বর্গসিড়ি নিৰ্ম্মাণে অতিরিক্ত বিলম্ব হইয় পড়িতে লাগিল। সবুরে মেওয়া ফলে- এই প্রবচন যে অনার্য্য-বিধান ভাষা ভীৰ্য্যেই তাহার প্রমাণ । আমাদের আর্য্যশাস্ত্রসন্মত ‘শুভস্ত শীঘ্ৰং” এ ব্যবস্থার লঙ্ঘনে সন্তোযের অদৃষ্টে অনার্য্যের সেই মেওয়৷ ফলটি ফলিল না । হঠাৎ এক দিন দলপতির অজ্ঞাপত্র আসিল, “তোমার হাতের কার্য সত্ত্বর শেষ করিরা লইয়। অবিলম্বে এখানে আসিয়া হাজির হও।” সে পত্র বিজনকুমারের মারফৎই সন্তোষ পাইল । এখন অতুলেশ্বর এখানে নাই, রাত্রির অন্ধকারে সন্তোষের আডডায় আসিয়া পত্র দিতে বিজন কোন আপত্তির কারণ দেখিল না । গুরুর চিঠি পাইয়া খুব একটা নৈরাপ্তের ভাবে সন্তোষের মন ভরিয়া উঠিল, কিন্তু এ ভাবের প্রশ্রয় দেওয়া অনুচিত ; সে শুষ্ঠ হাসি হাসিয়া কহিল, “ধে কাযটা শেয করতে গুরুদেব ইঙ্গিত করেছেন, সেটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে—আজই রাতারাতি বাকীটুকু শেষ ক’রে ফেলে- কালই আমি এখান থেকে তা হ’লে চ’লে যাই ।” বলিয়। আলমারির আড়ালে যে কোণে বসিয়া সে বোমা প্রস্তুত করিতেছিল, সেইখানেই বন্দুক আনিয়া, অৰ্দ্ধ-প্রস্তুত বোমাটার দিকে অঙ্গুলি নির্দিষ্ট করিষ্ঠ কছিল--"ঐ দেথ ।” বিজন বলিল--"রাতের মধ্যে কণযট) কি শেষ হবে ? * “হতেই হবে, গুরুর আজ্ঞা । এখন এস, তোমাকে চেকখানা দিই ।” বলিয়া দেরাজ খুলিয়া সে চেকট বাহির করিল। বিজন আপত্তি করিয়া বলিল,-“ন না, আমি নিতে পারব ন—তুমি রাখ । তুমি ত কলিকাতা হয়েই যাবে, অমনি ভাঙ্গিয়ে নিও।” "না, ভাই, ও সব কাযে বিলম্ব হ’তে পারে--- গুরু শীঘ্র আমাকে যেতে বলেছেন । তুমি সেক্রেটারী তোমার কাছেই এখানা থাকা উচিত । ভাঙ্গতে পার ভাঙ্গিয়ে নিয়ে, নইলে আমার ফিরে আসা পর্য্যস্ত অপেক্ষা ক'রে। ইত্যবসরে গুরুদেব এ সম্বন্ধে কি বলেন— তা-ও জেনে রাখব।* অগত্যা চেকখানা বিজন রায় গ্রহণ করিল।