পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্তু ר ססי কোন বাহিরের বস্তুর সংস্পর্শে আসে—বাহ বস্তুগুলির অনুভূতি ভিতরে বহন করিবার জন্য ইন্দ্রিয়গুলির প্রয়োজন—তখনই একটি কম্পন উৎপন্ন হয় ; উহ সংশয়াত্মক মন । তারপরই একটি প্রতিক্রিয়া হয়—উহা নিশ্চয়াত্মিক বুদ্ধি, আর এই বুদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অহংজ্ঞান ও বাহ বস্তুর জ্ঞান উদিত হয়। মনে কর, আমার হাতের উপর একটি মশা আসিয়া দংশন করিল। এই বাহবন্ত-জনিত বেদন আমার চিত্তে নীত হইল, উহা একটু কম্পিত হইল—মনোবিজ্ঞানমতে উহার নামই ‘মন’ । তাহার পরেই একটি প্রতিক্রিয়া হইল এবং তৎক্ষণাৎ আমার ভিতর এই ভাবের উদয় হইল যে, আমার হাতে একটি মশা বসিয়াছে, সেটিকে তাড়াইতে হইবে। তবে এইটুকু বুঝিতে হইবে যে, হ্রদে যে-সকল আঘাত আসে, সেগুলি সবই বহির্জগৎ হইতে ; কিন্তু মনোহ্রদে আঘাত বহির্জগৎ হইতেও আসিতে পারে, আবার অন্তর্জগৎ হইতেও”আসিতে পারে । চিত্ত এবং উহার বিভিন্ন অবস্থার নাম ‘আন্তঃকরণ’ ! পুর্বে যাহা বর্ণিত হইল, তাহার সহিত তোমাদিগকে আর একটি বিষয় বুঝিতে হইবে ; তাহা হইলে ইহা দ্বারা অদ্বৈতবাদ বুঝিবার বিশেষ সাহায্য হইবে। তোমাদের মধ্যে সকলে নিশ্চয়ই মুক্ত দেখিয়াছ, এবং অনেকেই জানো—মুক্ত কিভাবে নির্মিত হয়। শুক্তির মধ্যে একটু ধূলি ও বালুকণা প্রবেশ করিয়া উহাকে উত্তেজিত করিতে থাকে, আর শুক্তির দেহ উহার উপর প্রতিক্রিয়া করিয়া ঐ ক্ষুদ্র বালুকণাকে নিজ শরীরনিঃস্থত রসে প্লাবিত করিতে থাকে। উড়াই তখন নির্দিষ্ট গঠন প্রাপ্ত হইয়া মুক্তারূপে পরিণত হয়। এই মুক্ত যেরূপে গঠিত হয়, আমরা সমগ্র জগ৯কে ঠিক সেই ভাবে গঠন করিতেছি । বাহাজগৎ হইতে আমরা কেবল উত্তেজনা পাই, এমন কি সেই উত্তেজনার অস্তিত্ব জানিতে হইলেও আমাদিগকে ভিতর হইতে প্রতিক্রিয়া করিতে হয় ; আর যখন অমর। এই প্রতিক্রিয়া করি, তখন প্রকৃতপক্ষে আমরা আমাদের নিজ মনের কিছুটাই সেই উত্তেজনার দিকে প্রেরণ করি ; আর যখন আমরা উহাকে জানিতে পারি, তখন আমাদের নিজ মন ঐ উত্তেজনা দ্বারা যেভাবে আকারিত হয়, মামরা সেই-ভাবে আকারিত মনকেই জানিতে পারি। যাহার বহির্জগতের বাস্তবতায় বিশ্বাস করিতে চান, প্তাহাদিগকে এ-কথা মানিতে হইবে, আজকাল 'শরীরবিজ্ঞানের এই উন্নতির দিনে এ-কথা না মানিয়া আর উপায় নাই যে, যদি বহির্জগৎকে আমরা ‘ক’ বলিয়া নির্দেশ করি, তবে