পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

있8 স্বামীজীর বুী ও রচনা স্বরূপ বিচার করিলে সহজেই প্রতীত হয় যে, উহারা চিরস্থায়ী হইতে পারে না। যদি স্বর্গ বলিয়৷ কিছু থাকে, তবে তাহা এই মর্ত্যলোকেরই পুনরাবৃত্তিমাত্র হইবে—একটু না হয় বেশী স্থখ, একটু না হয় বেশী ভোগ । তাহাতে বরং আরও মন্দই হইবে । এইরূপ স্বর্গ অনেক । যাহার। ফলাকাজক্ষার সহিত ইহলোকে কোন সংকর্ম করে, তাহার মৃত্যুর, পর এইরূপ কোন স্বর্গে ইন্দ্রাদি দেবত হইয়া জন্মগ্রহণ করে। এই দেবত্ব বিশেষ বিশেষ পদযাত্র। এই দেবতারাও এক সময়ে মানুষ ছিলেন ; সংকর্মবশে ইহাদের দেবত্বপ্রাপ্তি হইয়াছে । ইন্দ্র-বরুণাদি কোন দেব-বিশেষের নাম নহে । সহস্ৰ সহস্ৰ ইন্দ্র হইবেন । রাজ মহুয মৃত্যুর পর ইন্দ্রত্ন লাভ করিয়াছিলেন । ইন্দ্রত পদমাত্ৰ । কোন ব্যক্তি সংকর্মের ফলে উন্নত হইয়। ইন্দ্রত্ন লাভ করিলেন, কিছুদিন সেই পদে প্রতিষ্ঠিত রহিলেন, আবার সেই দেবদেহ ত্যাগ করিয়া পুনরায় মনুষ্ঠুরূপে জন্মগ্রহণ করিলেন । মতুযুজন্মই শ্রেষ্ঠ জন্ম । কোন কোন দেবতা স্বৰ্গসুখের বাসন ত্যাগ করিয়া মুক্তিলাভের চেষ্টা করিতে পারেন, কিন্তু যেমন এই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ ধন মান ঐশ্বর্য লাভ করিলে উচ্চতত্ত্ব ভুলিয়া যায়, সেইরূপ অধিকাংশ দেবতাই ঐশ্বৰ্যমদে মত্ত হইয়। মুক্তির চেষ্টা করেন না, তাহাদের শুভ কর্মের ফলভোগ শেষ হইয়া গেলে তাতারা পুনরায় এই পৃথিবীতে আসিয়া মনুষ্যদেহ ধারণ করেন । অতএব এই পৃথিবীই কর্মভূমি ; এই পৃথিবী হইতেই আমরা মুক্তি লাভ করিতে পারি। সুতরাং এই-সকল স্বর্গেও আমাদের বিশেষ প্রয়োজন নাই । তবে কোন বস্তুলাভের জন্য আমাদের চেষ্টা করা উচিত?--মুক্তি । আমাদের শাস্ত্র বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ স্বর্গেও তুমি প্রকৃতির সমাত্র । , বিশ হাজার বৎসর তুমি রাজত্ব ভোগ করিলে—তাহাতে কি হইল ? যতদিন তোমার শরীর থাকে, ততদিন তুমি মুখের দাসমাত্র। যতদিন দেশ-কাল তোমার উপর কার্য করিতেছে, ততদিন তুমি ক্রীতদাসমত্রে । এই কারণেই আমাদিগকে বহিঃপ্রকৃতি ও অস্তঃপ্রকৃতি—উভয়কে জয় করিতে হইবে । প্রকৃতি যেন তোমার পদতলে থাকে--প্রকৃতিকে পদদলিত করিয়া, তাহাকে অতিক্রম করিয়া স্বাধীন মুক্তভাবে তোমাকে নিজ,মহিমায় প্রতিষ্ঠিত হইতে হইবে। তখন তুমি জন্মের অতীত হইলে—সুতরাং তুমি মৃত্যুরও পারে যাইলে। তখন তোমার’ সুখ চলিয় গেল, সুতরাং তুমি দুঃখেরও অতীত হইলে। তখনই তুমি সর্বাতীত অব্যক্ত অবিনাশী আনন্দের অধিকারী হইলে । আমরা যাহাকে এখানে মুখ ও