অনাসক্তিই পূর্ণ আত্মত্যাগ ১২১ কখনও অপরের দ্বারা শিক্ষিত হয় নাই। প্রত্যেককেই নিজে নিজে শিক্ষা লাভ করিতে হইবে—বাহিরের আচার্ধ কেবল উদ্দীপক কারণমাত্র। সেই উদ্দীপনা দ্বারা আমাদের ভিতরের আচাৰ্যই আমাদিগকে সকল বিষয় বুঝাইয়৷ দিবার জন্য উদ্বোধিত হন। তখন সব কিছুই আমাদের অনুভব ও চিন্তা দ্বারা প্রত্যক্ষও স্পষ্ট হইয়া আসে। তখন আমরা নিজেদের আত্মার ভিতরে ঐ-সকল তত্ত্ব অনুভব করিব এবং এই অনুভূতিই প্রবল ইচ্ছাশক্তিরূপে পরিণত হইবে। প্রথমে ভাব, তারপর ইচ্ছা । এই ইচ্ছা হইতে এমন প্রবল কর্মের শক্তি আসিবে যে, তাহ প্রতি শিরায়, প্রতি স্নায়ুতে, প্রতি পৃেশীতে ক্রিয়। করিতে থাকিবে—যতক্ষণ না তোমার সমুদয় শরীরটি এই নিষ্কাম কর্মযোগের একটি যন্ত্রে পরিণত হয়। ইহার ফল সম্পূর্ণ আত্মত্যাগ-পূর্ণ নিঃস্বার্থতা n ইহা কোন মতামত বা বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে না। খ্ৰীষ্টানই হও, য়াহুদীই হও আর জেণ্টাইলই হও, তাহাতে কিছু আসে যায় না ; একমাত্র জিজ্ঞাস্ত—তুমি কি স্বার্থশূন্ত ? যদি তাই হও, তবে তুমি একখানি নর্মপুস্তকও না পড়িয়া এবং কোন গির্জায় বা মন্দিরে না গিয়াও সিদ্ধ হইবে। আমাদের বিভিন্ন যোগপ্রণালীর প্রত্যেকটিই অপর প্রণালীর কিছুমাত্র সহায়তা না লইয়া মানুষকে পূর্ণ করিতে সমর্থ ; কারণ প্রত্যেকটিরই লক্ষ্য একই। কৰ্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ—সকল যোগই মুক্তিলাভের সাক্ষাৎ ও অন্যনিরপেক্ষ উপায় । ‘সাংখ্যযোগেী পুথশ্বালা: প্ৰবদস্তি ন পণ্ডিতা:– অজ্ঞেরাই কর্ম ও জ্ঞানকে পৃথক্ বলিয়া থাকে, পণ্ডিতেরা নয়। জ্ঞানীর জানেন, আপাতত: পৃথক্ বলিয়া প্রতীয়মান হইলেও শেষ পর্যন্ত ঐ দুই পথ মানুষকে পূর্ণতারূপ একই লক্ষ্যে পৌছাইয়া দেয়।