পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুক্তি আমরা পূর্বেই বলিয়াছি, ‘কার্য এই অর্থ ব্যতীত কর্মী-শব্দদ্বারা মনোবিজ্ঞানে কাৰ্য-কারণ-ভাবও বুঝাইয়া থাকে। যে কোন কার্ধ বা যে-কোন চিস্তা কোন কিছু ফল উৎপন্ন করে, তাহাকেই ‘কর্ম’ বলে। সুতরা" ‘কর্মবিধানে'র অর্থ কার্য-কারণের নিয়ম—অর্থাৎ কারণ ও কার্যের অনিবার্ধ সম্বন্ধ। আমাদের (ভারতীয় ) দর্শনের মতে এই কর্মবিধান সমগ্র বিশ্বজগতের পক্ষেই সত্য । যাহ। কিছু আমরা দেখি, অনুভব করি, অথবা যেকোন কাজ করি—বিশ্বজগতে যাহা কিছু কাজ হইতেছে—সবই একদিকে পূর্বকর্মের ফলমাত্র, আবার অপর দিকে এগুলিই কারণ হইয়া অন্য ফল উৎপাদন করে। এই সঙ্গে বিচার করা আবশ্বক ‘বিধি” বা ‘নিয়ম বলিতে কি বুঝায়। ঘটনাশ্রেণীর পুনরাবর্তনের প্রবণতার নামই নিয়ম বা বিধি। যখন আমব। দেখি, একটি ঘটনার পরেই আর একটি ঘটনা ঘটিতেছে, কখন বা ঘটনা-দুইটি যুগপৎ ঘটিতেছে, তখন আমরা আশা করি, সর্বদাই এরূপ ঘটিবে। আমাদের দেশের প্রাচীন নৈয়ায়িকগণ ইহাকে ‘ব্যাপ্তি’ বলিতেন। র্তাহাদের মতে নিয়মসম্বন্ধে আমাদের সমুদয় ধারণার কারণ অনুষঙ্গ’ । ঘটনাপরম্পরা আমাদের মনে অনুভূত বিষয়গুলির সঙ্গে অপরিবর্তনীয়ভাবে জডিত থাকে। সেইজন্য যখনই আমরা কোন বিষয় অনুভব করি, তখনই মনের অস্তগত অন্যান্য বিষয়গুলির সহিত ইহার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। একটি ভাব—অথবা আমাদের মনোবিজ্ঞান অনুসারে চিত্তে উৎপন্ন একটি তরঙ্গ সর্বদাই অনেক সদৃশ তরঙ্গ উৎপন্ন করে । মনোবিজ্ঞানে ইহাকেই ‘ভাবানুষঙ্গ-বিধান’ বলে, আর ‘কার্য কারণ-সম্বন্ধ এই ব্যাপক বিধানের একটি দিকমাত্র। ভাবানুষঙ্গের এই ব্যাপকতাকেই সংস্কৃতে ‘ব্যাপ্তি’ বলে। অন্তর্জগতে যেমন, বহির্জগতে ৪ তেমনি বিধান বা নিয়মের ধারণ একই প্রকার ; একটি ঘটনার পর আপ একটি ঘটিবে—তাহ এবং ঘটনাপরম্পরা বার বার ঘটিতে থাকিবে, আমল এইরূপই আশা করি। তাহা হইলে প্রকৃতপক্ষে কোন নিয়ম প্রকৃতিতে নাই । কার্যতঃ ইহা বলা ভুল যে, মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীতে আছে, অথবা প্রকৃতির কোন স্থলে বস্তুগতভাবে কোন নিয়ম আছে। যে প্রণালীতে আমাদের মন