পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*Rе о স্বামীজীর বাণী ও রচনা কেবল সাক্ষী হয়ে দেখে যাও । মন তো আর আত্মা নয়, মন হচ্ছে জড়ের একটু স্বল্প অবস্থামাত্র। স্নায়ুশক্তি দিয়ে একে আয়ত্ত করে নিজেদের উদ্দেশু সাধনের জন্য মনকে কাজে লাগানোর উপায় শিখে নিতে পারি। দেহ হচ্ছে মনের (ব্যক্তিভাবের ) বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু আমরা আত্মা, দেহ-মনের অতীত ; আমরা অনন্ত, অপরিবর্তনীয় সাক্ষিস্বরূপ আত্মা । দেহটা চিন্তারই ঘনীভূত রূপ। যখন বাম নাসা দিয়ে নিঃশ্বাস পড়বে তখন বিশ্রামের সময়, যখন দক্ষিণ নাসা দিয়ে পড়বে তখন কাজের সময়, যখন দুই নাসা দিয়েই পড়বে তখন ধ্যানের সময়। যখন দেহ-মন শাস্ত হয়ে আসবে আর দুই নাসা দিয়েই সমানভাবে নিঃশ্বাস পড়বে, তখন বুঝতে হবে ঠিক ঠিক ধ্যানের অবস্থা হয়েছে। প্রথমেই জোর ক’রে মনকে একাগ্র করবার চেষ্টা ক’রে কোন লাভ নেই। চিস্তার নিয়ন্ত্রণ আপনিই হবে। অঙ্গুষ্ঠ ও অনামিকার সাহায্যে বহুদিন এই প্রাণায়াম অভ্যাস করবার পর, কেবল চিস্তার মধ্য দিয়ে ইচ্ছাশক্তির দ্বারাই ঐরকম করা যেতে পারে। প্রাণায়ামের এইবার একটু পরিবর্তন দরকার। যেসব সাধক ইষ্টমন্ত্র পেয়েছে, তারা রেচক ও পূরকের সময় ওঁ-কারের পরিবর্তে ইষ্টমন্ত্র এবং কুম্ভকের সময় ‘ই’ মন্ত্র জপ করবে। " কুম্ভকের সময় যখন “হু’ মন্ত্র জপ করবে, তখন মনে মনে কল্পনা করবে, সেই ধৃত নিঃশ্বাস পুনঃ পুনঃ কুণ্ডলিনীর মাথায় আঘাত করছে এবং তার দ্বারা তিনি যেন জাগরিত হচ্ছেন। শুধু ঈশ্বরের সঙ্গে নিজেকে অভিন্ন মনে কর। ধ্যান করবার কিছুক্ষণ পরে আমরা বুঝতে পারৰে যে, চিস্তাগুলি আলছে ; কি ক’রে চিস্তাগুলি উঠছে আর আমরা কি-ই বা চিস্তা করতে যাচ্ছি, তাও বুঝতে পারবো। জাগ্রৎ অবস্থায় যেমন আমরা তাকিয়ে দেখতে পাই যে, একটা লোক আসছে, এও অনেকটা তেমনি। যখন আমরা মন থেকে আত্মাকে পৃথক করতে পারবো, যখন আমরা বুঝতে পারবো যে, আমরা ও আমাদের চিন্তা সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস, তখনই আমরা ঐ অবস্থায় ছেছি। চিন্তাগুলি যেন তোমাকে পেয়ে না বসে ; সর্বদা তাদের পাশ #াটাবে, তা হলেই তার আপনি বিলীন হয়ে যাবে।