পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> bra স্বামীজীর বাণী ও রচনা খাওয়া দাওয়া সম্বন্ধে তো এই মোট কথা শুনলে। এখন পাশ্চাত্যর} কি খায় এবং তাদের আহারের ক্রমশ: কেমন পরিবর্তন হয়েছে, তাও• কিছু বলি । গরীব অবস্থায় সকল দেশের খাওয়াই ধান্তবিশেষ ; এবং শাক-তরকারি মাছ-মাংস বিলাসের মধ্যে এবং চাটনির মতো ব্যবহৃত হয়। যে দেশে যে শস্ত প্রধান ফসল, গরীবদের প্রধান খাওয়া তাই ; অন্যান্য জিনিস আনুষঙ্গিক । যেমন বাঙলা ও উড়িষ্যায়, মাদ্রাজ উপকূলে ও মালাবার উপকূলে ভাত প্রধান খাদ্য ; তার সঙ্গে ডাল তরকারি, কখন কখন মাছ মাংস চাটনিবৎ । ভারতবর্ষের অন্যান্য সর্বদেশে অবস্থাপন্ন লোকের জন্ত গমের রুটি ও ভাত ; সাধারণ লোকের নানাপ্রকার বজরা, মড়য়া, জনার, ঝিঙ্গোরা প্রভৃতি ধান্তের রুটি প্রধান খাদ্য । শাক, তরকারি, ডাল, মাছ, মাংস, সমস্তেরই—সমগ্র ভারতবর্ষে ঐ রুটি বা ভাতকে স্বস্বাদ করবার জন্য ব্যবহার, তাই ওদের নাম ব্যঞ্জন । এমন কি পাঞ্জাব, রাজপুতানা ও দক্ষিণাত্য দেশে অবস্থাপন্ন আমিষাশী লোকের—এমন কি রাজারাও—যদিও নিত্য নানাপ্রকার মাংস ভোজন করেন, তথাপি রুটি বা ভাতই প্রধান খাদ্য। যে ব্যক্তি আধ সের মাংস নিত্য খায়, সে এক সের রুটি তার সঙ্গে নিশ্চিত খায় । পাশ্চাত্যদেশে এখন যে সকল গরীব দেশ অাছে [ তাদের ] এবং ধনী দেশের গরীবদের মধ্যে ঐ প্রকার রুট এবং আলুই প্রধান খাদ্য"; মাংসের চাটনি মাত্র—তাও কালেভদ্রে। স্পেন, পোতুগাল, ইতালি প্রভৃতি অপেক্ষাকৃত উষ্ণদেশে যথেষ্ট দ্রাক্ষা জন্মায় এবং দ্রাক্ষা-ওয়াইন অতি সস্তা । সে সকল ওয়াইনে মাদকতা নাই ( অর্থাৎ পিপে-খানেক না খেলে তো আর নেশ} হবে না এবং তা কেউ খেতেও পারে না ) এবং যথেষ্ট পুষ্টিকর খাদ্য । সে দেশের দরিদ্র লোকে এজন্য মাছ-মাংসের জায়গায় ঐ দ্রাক্ষারস দ্বারা পুষ্টি সংগ্রহ করে। কিন্তু উত্তরাঞ্চল—যেমন রুশিয়া, সুইডেন, নরওয়ে প্রভৃতি দেশে দরিদ্র লোকের আহার প্রধানত: রাই-নামক ধান্তের রুটি ও এক-আধ টুকরা শুটকী মাছ ও আলু। ইউরোপের অবস্থাপন্ন লোকের এবং আমেরিকার আবালবৃদ্ধবনিতার খাওয়া আর এক রকম—অর্থাৎ রুটি ভাত প্রভৃতি চাটনি এবং মাছ-মাংসই