পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミン o স্বামীজীর বাণী ও রচনা আমি মূৰ্খ মানুষ, যা বুঝি তাই নিয়েই এ পারি-সভায় বিশেষ প্রতিবাদ করেছি। এদেশী এবং স্বদেশী পণ্ডিতদের জিজ্ঞাসা করছি। সময় পেলে আরও সংশয় ওঠাবার অাশা আছে । এ কথা তোমাদেরও বলি—তোমরা পণ্ডিত-মনিন্তি, পুথি-পাতড়া খুজে দেখ। ইউরোপীরা যে দেশে বাগ পান, আদিম মানুষকে নাশ ক’রে নিজের সুখে বাস করেন, অতএব আর্যরাও তাই করেছে ! ওরা হা-ঘরে, ‘হা-অন্ন হা-অন্ন করে, কাকে লুঠবে মারবে ব’লে ঘুরে বেড়ায়—আর্যরাও তাই করেছে! বলি, এর প্রমাণটা কোথায়—আন্দাজ ? ঘরে তোমার আন্দাজ রাখগে । কোন বেদে, কোন স্থক্তে, কোথায় দেখছ যে, আর্যরা কোন বিদেশ থেকে এদেশে এসেছে ? কোথায় পাচ্ছ যে, তারা বুনোদের মেরে কেটে ফেলেছেন ? খামক আহাম্মকির দরকারটা কি ? আর রামায়ণ পড়া তো হয়নি, খামকা এক বৃহৎ গল্প—রামায়ণের উপর-কেনু বানাচ্ছ ? রামায়ণ কিনা আর্যদের দক্ষিণী বুনো-বিজয়! বৃটে—রামচন্দ্র আর্য রাজা, সুসভ্য ; লড়ছেন কার সঙ্গে ? —লঙ্কার রাবণ রাজার সঙ্গে । সে রাবণ, রামায়ণ পড়ে দেখ, ছিলেন রামচন্দ্রের দেশের চেয়ে সভ্যতায় বড় বই কম নয়। লঙ্কার সভ্যতা অযোধ্যার চেয়ে বেশী ছিল বরং, কম তো নয়ই । তারপর বানরাদি দক্ষিণী লোক বিজিত হ’ল কোথায় ? তার হ’ল সব শ্রীরামচন্দ্রের বন্ধু মিত্র । কোন গুহকের, কোন বালির রাজ্য রামচন্দ্র ছিনিয়ে নিলেন--ত বলো না ? হ’তে পারে দু-এক জায়গায় আর্য আর বুনোদের যুদ্ধ হয়েছে, হ’তে পারে দু-একটা ধূর্ত মুনি রাক্ষসদের জঙ্গলের মধ্যে ধুনি জালিয়ে বসেছিল। মটকা মেরে চোখ বুজিয়ে বসেছে, কখন রাক্ষসেরা চিলঢেল হাড়গোড় ছোড়ে। যেমন হাড়গোড় ফেলা, অমনি নাকিকান্না ধ’রে রাজাদের কাছে গমন । রাজারা লোহার জামাপরা, লোহার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘোড়া চড়ে এলেন ; বুনো হাড় পাথর ঠেঙ্গা নিয়ে কতক্ষণ লড়বে? রাজারা মেরে ধ’রে চলে গেল। এ হ’তে পারে ; কিন্তু এতেও বুনোদের জঙ্গল কেড়ে নিয়েছে, কোথায় পাচ্ছ ? অতি বিশাল নদনদীপূৰ্ণ, উষ্ণপ্রধান সমতল ক্ষেত্ত্ব—আর্ধসভ্যতার তাত। আর্ষপ্রধান, নানাপ্রকার স্বসভ্য, অর্ধসভ্য, অসভ্য মানুষ-এ বস্ত্রের তুলে,