পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাববার কথা 8ෆ হয়, আবার তার ওপর মাঝে মাঝে পূর্বোক্ত স্বরে জানানও আছে যে, তিনি সদাই প্রভুর জন্য প্রাণ পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত। এ ভক্তির ডোরে যদি প্রভু স্বয়ং না বাধা পড়েন, তবে সবই মিথ্যা। পাশ্বচর চারটা আহাম্মকও তাই ঠাওরায় । কিন্তু ভোলাচাঁদ প্রভুর জন্য একটিও দুষ্টামি ছাড়তে প্রস্তুত নন। বলি, ঠাকুরজী কি এমনই আহাম্মক ? এতে যে আমরাই ভুলিনি! ভোলাপুরী বেজায় বেদান্তী—সকল কথাতেই তার ব্রহ্মত্বসম্বন্ধে পরিচয়টুকু দেওয়া আছে। ভোলাপুরীর চারিদিকে যদি লোকগুলো অন্নাভাবে হাহাকার করে—তাকে স্পর্শও করে না ; তিনি মুখদুঃখের অসারতা বুঝিয়ে দেন । যদি রোগে শোকে অনাহারে লোকগুলো মরে ঢিপি হ’য়ে যায়, তাতেই বা র্তার কি ? তিনি অমনি আত্মার অবিনশ্বরত্ব চিস্ত করেন । তার সামনে বলবান দুর্বলকে যদি মেরে ও ফেলে, ভোলাপুরী ‘আত্মা মরেন ও না, মারেনও মা—এই শ্রতিবাক্যের গভীর অর্থসাগরে ডুবে যান। কোনও প্রকার কর্ম করতে ভোলাপুরী বড়ই নারাজ। পেড়াপীড়ি করলে জবাব দেন যে, পূর্বজন্মে ওসব সেরে এসেছেন । এক জায়গায় ঘা পড়লে কিন্তু ভোলাপুরীর আত্মৈক্যানুভূতির ঘোব ব্যাঘাত হয়—যখন তার ভিক্ষার পরিপাটিতে কিঞ্চিৎ গোল হয় বা গৃহস্থ তার আকাঙ্ক্ষানুযায়ী পূজা দিতে নারাজ হন, তখন পুীজার মতে গৃহস্থের মতো ঘৃণ্য জীব জগতে আর কেহই থাকে না এবং যে গ্রাম তাহার সমুচিত পূজা দিলে না, সে গ্রাম যে কেন মুহূর্তমাত্রও ধরণীর ভারবৃদ্ধি করে, এই ভাবিয়া তিনি আকুল হন । ইনিও ঠাকুরজীকে"আমাদের চেয়ে আহাম্মক ঠাওরেছেন । বলি, রামচরণ ! তুমি লেখাপড়া শিখলে না, ব্যবসা-বাণিজ্যের ও সঙ্গতি নাই, শারীরিক শ্রমও তোমা দ্বারা সম্ভব নহে, তার ওপর মেশা-ভাঙ এবং দুঃমিগুলাও ছাড়তে পার না, কি ক’রে জীবিকা কর, বল দেখি ?"রামচরণ‘সে সোজা কথা, মশায়—আমি সকলকে উপদেশ করি।’ রামচরণ ঠাকুরজীকে কি ঠাওরেছেন ?