পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
১০৩

যেন নিজের মধ্যে অপরাধীর কুণ্ঠা অনুভব করিতেছিল। বাগানে শীতের শেষে তখনও অজস্র শীত-ফুলের আমদানী চলিতেছিল। চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলি পর্য্যাপ্ত পুষ্পালঙ্কারে ভূষিত হইয়া বর্ণে ও গন্ধে অমিয়ার পুষ্পলুব্ধ চিত্তকে মুগ্ধ ও আবিষ্ট করিয়া তুলিল। নিজের অজ্ঞাতে ধীরে ধীরে সে বাগানের ভিতরেই আসিয়া দাঁড়াইল। এখানকার অনেক গাছই রণেন্দ্রেরে নিজ-হাতের যত্ন ও চেষ্টায় জন্মিয়াছে। ঐ যে ফুলভারনতাঙ্গী লতাটি সহকার অবলম্বনে দুলিয়া দুলিয়া নিজ সৌভাগ্য-গর্ব্ব প্রচার করিতেছে, উহার জন্ম-ইতিহাস নীনার মুখে অমিয়া শুনিয়া লইয়াছে। দেওর-ভাজে বাজি রাখিয়া তাহারা দুইটি লতাগাছ পুঁতিয়াছিল। মীনার গাছটি কোন্ সত্যযুগে মহাপ্রস্থান করিয়াছে, তাহার সাল তারিখ সে নিজেও স্মরণ রাখিতে পারে নাই। কিন্তু বাজি-হারার দণ্ডস্বরূপ প্রতিদ্বন্দ্বীর গাছটিতে জলসেচন করিয়া আসিতেছে যে কতদিন, তাহার হিসাব হয়ত তাহার ডায়েরীর পাতা খুঁজিলে এখনও মিলিতে পারে।

 রণেন্দ্রেরে কক্ষের বাতায়ন রুদ্ধ। তাঁহার বা খোকার কথার শব্দ বা হাসির সুর বাতাসে ভাসিয়া আসিতেছিল না। রুদ্ধদ্বার জানালাটির পানে চাহিয়া চাহিয়া অমিয়ার ইচ্ছা হইতেছিল, সেখানকার অধিবাসীদের কোন একটু খবর