পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
১১

শাড়ীর আঁচল মাথায় দিয়া বলিত,—“মাছীমা, আমি ছছুলবালী দাব”—সত্যবতী বাধা দিয়া কহিত—“ছিঃ শ্বশুরবাড়ী যেতে নেই, সেখানে ‘জুজু’ থাকে। তুমি আমার কাছে থেকো—কক্ষনো শশুর-বাড়ী যেও না।” বালিকা অনিচ্ছাসত্ত্বেও মাথার কাপড় খুলিয়া ফেলিয়া, হাত দিয়া চোখ মুছিয়া বলিত—“ছিঃ, ছছুবালী দুত্তূ—দেতে নেই—দাব না।

 সত্যবতী হাসিয়া মেয়েকে বুকে তুলিয়া লইয়া বলিত—“মনে রেখো—আলেয়া দূর থেকেই আলো দেখায়, কাছে এলে গলা টিপে ধরে।”

 ত্রিপুরাচরণের ভিতরটা রোগে শোকে অন্তঃসারশূন্য হইয়া গিয়াছিল। একবার একটু বেশী জ্বর হওয়ায় সে ধাক্কা আর সামলাইতে পারিলেন না। অনাথিনী কন্যা ও দৌহিত্রীর চিন্তা করিতে করিতেই তিনি এখানকার হিসাব মিটাইয়া দিলেন।

 পিতার মৃত্যুতে সহায়হীনা সত্যবতী ভগিনীপতিকে উচিত বোধে ডাকিয়া পাঠাইয়াছিল—“তাহার জন্য না হউক, অমিয়ার জন্যও এখানকার বিষয়-সম্পত্তির বন্দোবস্ত করিয়া দেওয়া একমাত্র ত তাঁহারই উচিত কার্য্য।” ভগিনীপতি নিমন্ত্রিতের মত কেবল শ্রাদ্ধের দিন একবার