ব্যক্তাব্যক্তরহস্ত । ২৩ যেমন—ছেলেদের শিক্ষার জন্ত নূতন কোনোপ্রকার বৈজ্ঞানিকনিয়ম প্রবর্তিত করিতে হইলে কৰ্ত্তাই তাহ পারেন, তা বই, গৃহিণী তাহাতে নিতান্তই অপটু, তেমনি নিশ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ করিয়া কুম্ভক করিতে হইলে, অথবা নিশ্বাসপ্রশ্বাস কমাইয়া-বাড়াইয়া রেচকপূরক করিতে হইলে জ্ঞানই তাহ পারে, তা বই প্রাণু তাহাতে নিতান্তই অপটু ৷ কিন্তু জ্ঞান যতই কেন প্রাণের উপরে কর্তৃত্ব করুক না, প্রাণকে সে চটাইয়া প্রাণের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্রভাবে কোনো কাৰ্য্যই করিতে পারে না। প্রাণায়াম সাধন করিবার সময় জ্ঞান ধীরে ধীরে প্রাণকে বশ করিয়া আপনার অভিপ্রেত পথে বাগাইয়। আনে, তা বই, প্রাণকে তুচ্ছতাচ্ছীলাও করে না, আর, প্রাণের উপরে যথেচ্ছ বলপ্রকাশও করে না । জ্ঞান সবসময়েই প্রাণের সহিত সদ্ভাবে মিলিয়া কার্য্য করে,— প্রাণের সহিত আড়াআড়ি করিয়া কোনো কার্য্যই করে না । জ্ঞান যখন ঈশনা খাটাইয়৷ প্রাণায়াম সাধন করে তখন প্রাণ জ্ঞানকে আপনার বাধা-পথের বেশী বাহিরে যাইতে দেয় না। প্রাণ যেমন কতকমাত্রা জ্ঞানের অভিপ্রায়ের সঙ্গে গোড় দিয়া চলে, জ্ঞানও তেমনি কতকুমাত্রা প্রাণের অভিপ্রায়ের সঙ্গে গোড় দিয়া চলে, আর, উভয়ের সুেরূপে চলিবার কারণ শুদ্ধ-কেবল পরস্পরের প্রতি মনের ভালবাস। ; কেননা মন জ্ঞান প্রাণের মধ্যস্থস্বরূপ। জ্ঞান এবং প্রাণের মধ্যে কোনো স্থত্রে দাম্পত্যকলহ বাধিলে মন মাঝে পড়িয়া বিবাদ মিটাইয়া দিতে চেষ্টা করে । ফলে, জ্ঞান এবং প্রাণের মধ্যে কলহ যাহা সময়ে-সময়ে বাধিতে দেখা যায়, তাহা হরগেীরীর কোন্দল বই আর কিছুই নহে। জ্ঞানবান জীবের জাগরিতাবস্থায় জ্ঞান এবং প্রাণ - উভয়ে একজোট হইয়া ঘরসংসার করে—এ তো দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে ; কিন্তু নিদ্রাবস্থায় কি হয়, সেটাও দেখা চাই।
পাতা:হারামনির অণ্বেষণ - দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭
অবয়ব