8 হারামণির অন্বেষণ । মূলে, তাহার পরিবর্তে ছিল কেবল একটা অন্ধ, পঙ্গু এবং অকমুণ্যের একশেষ তোমার বিছানায় পড়িয়া । সেই অসাড় অপদার্থটার কৰ্ম্ম কি আপনার বলে অজ্ঞান-অন্ধকার ঠেলিয়া-ফেলিয় । জ্ঞানে ভর দিয়া দাড়ানো ? যাহার হাত-পা অসাড়, চক্ষু অন্ধ, তাহার কি কৰ্ম্ম সাতার দিয়া পদ্মা পার হইয়া উচ্চডাঙায় উঠিয়া দাড়ানো ? সে তো তখন অকৰ্ত্তা। অকৰ্ত্তা’র আবার কৰ্ম্ম কিরূপ ? অকৰ্ত্তার কৰ্ম্মও যেমন, তার, বন্ধ্যার পুত্ৰও তেমনি দুইই সমান। ফল কথা এই যে, তোমার প্রগাঢ় নিদ্রাবস্থায়ু একে তো জাগিয়া উঠিতে পারিবার মতো শক্তি ছিল না তোমার হাড়ে একবিন্দুও ; ' তাহাতে আবার, জাগিয়া উঠিবার ইচ্ছা যে, কোনো দিক দিয়া তোমার মনের ত্রিসীমার মধ্যেও প্রবেশ করিবে, তাহার পথ ছিল না মূলেই। অতএব এটা স্থির যে, তুমি আপন ইচ্ছায় জাগিয়া ওঠে নাই। কাহার ইচ্ছায় তবে তোমার মনের অজ্ঞান অন্ধকার ঠেলিয়া-ফেলিয়া প্রাণের ভিতর হইতে জ্ঞানের আলোক অল্লে-অল্পে ফুটিয়া বাহির হইল ? সত্য ভিন্ন যখন দ্বিতীয় পদার্থ নাই, তখন কাজেই বলিতে হইতেছে যে জাগ্ৰংজগতেই হো’ক্ আর নিদ্রিত জগতেই হো’ক্, পৰ্ব্বতশিখরেই হো’ক্ আর সমুদ্রগন্ধুেই হো’ক্, পর্ণকুটীরেই হো’ক আর স্বর্ণপ্রাসাদেই হো’কৃ— যেখানে যে-কোনো কাৰ্য্য হইতেছে, হইতেছে তাহা সত্যেরই ইচ্ছায়—তোমার ইচ্ছায়’ও নহে, আমার ইচ্ছায়’ও নহে। সত্যই আপন ইচ্ছায় তোমাকে জাগাইযা-তুলিয়া তোমার নিকটে প্রকাশিত হইলেন; তা’ শুধু না—তিনিই আপন ইচ্ছায় তোমাকে জাগাইয়ারাগ্লুিয়া তোমার নিকটে প্রকাশ পাইতেছেন, আর, প্রকাশ পাইতেছেন বলিয়াই, তুমি অকুতোভয়ে বলিতে পারিত্বেছ যে, সত্য আছেন। সত্য এই যে তোমার নিকটে প্রকাশিত হইতেছেন,
পাতা:হারামনির অণ্বেষণ - দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮
অবয়ব