পাতা:হিমালয় - জলধর সেন.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধোশীমঠের পথে SS গম্ভীর মুখভঙ্গী ও বিজ্ঞের ন্যায় আকার ইঙ্গিত দেখে তার কাছে বড় ঘে সতে সাহস করলে না ; কিন্তু অল্পক্ষণের মধ্যেই স্বামীজি ও আমার সঙ্গে বিশেষ ঘনিষ্ঠত কোরে নিলে । তিন চার বৎসরের একটি মেয়ে আমার ডাইরীখানা নিয়ে গম্ভীর মুখে তার পাতা উলটে পালটে পোড়তে আরম্ভ কোলে ; শেষে পড়া হোলে আমার পেন্সিলটি দখল কোরে ডাইরীর একখানা সাদা পৃষ্ঠায় দেব অক্ষরে নানা কথা লিখতে লাগলো। আমাদের মত লোকের সাধ্য কি সে সব হরফের অর্থ আবিষ্কার করি । আজি কতদিন চোলে গিয়েছে, সেই বালিকার কথা ভুলে গিয়েছিলুম ; বালিকার্ট ও এতদিন না জানি কত বড় হোয়ে উঠেছে ; হয়তো সে তার সেই শৈশব-চাপল্য এতদিনে ভুলে গিয়েছে ; কিন্তু আজ এই বাঙ্গালা দেশের এক প্ৰান্তে এক ক্ষুদ্র গৃহে বোসে যখন ডাইরী খুলে এই সব লিখছি, তখন তাহার এক পৃষ্ঠে বালিকাহস্তের হিজিবিজি দেখে, সেই সুদূর পর্বতশিখরে দোকানীর সেই ছোট মেয়েটার কথা মনে হোলো । পেন্সিলের দাগ, আমার মনের মধ্যে তার সেই সুন্দর মুখখানি, দুটি মোটা মোটা চোখ ও কোকড়া কেঁকড়া বিশৃঙ্খল চুলের রাশের কথা জাগিয়ে দিলে। আমার প্রবাসের অন্যান্য স্মরণ চিহ্ন গুলির মধ্যে সাদা কাগজে বালিকা হস্তে পেন্সিলের দাগ একটি ; কিন্তু এর মধুরত্ব আর কেউ বুঝতে পারবে না, শুধু আমার স্মৃতিতেই এর ক্ষুদ্র ইতিহাস সন্নিবদ্ধ । পেন্সিলের দাগগুলি ক্ৰমেই মুছে যাচ্ছে, আমিও হয় তা এক দিন সেই ছোট মেয়ে টর কথা ভুলে যাব। মেয়েটি যখন আমার ডাইরীতে এই রকম পাণ্ডিত্য প্ৰকাশ কোচ্ছিল, সে সময় তার একটি বড় ভাই, বয়স প্ৰায় ছয় বৎসর হবে, আমার পর্বত ভ্রমণের সুদীর্ঘ যষ্টিখানা। Evolution theory র জোরে অশ্বরূপে পরিণত করে তাতেই সোয়ার হয়ে চাবুক লাগাচ্ছিল । এই রকমে আমাদের ক্ষুদ্র সঙ্গীগুলির সঙ্গে যে কত অনৰ্থক বাক্যব্যয় কোবুতে হোয়েছিল, তার সংখ্যা নেই । তাদের যে সমস্ত প্ৰশ্ন, তার সদুত্তর দেওয়া। আমাদের কাজ নয় ;