পাতা:হিমালয় - জলধর সেন.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 by হিমালয় সেই নর-কপালের সাদা সাদা অক্ষর গুলোর উপর লোকটার নজর পোড়লো ;-কাক চরিত্র বিদ্যাবলে সে পোড়লে “ভোজনং যত্র তত্ৰাপি শয়নং হাটুমন্দিরে, মরণং গোমতীতীরে অপরং বা কিং ভবিষ্যতি ।” লোকটা শুধু কাকচরিত্রই যে জানতো তা নয়, একটু বুদ্ধিবৃত্তিরও ধার ধারতো। ‘ অপরম্বা কিং ভবিষ্যতি” পাড়ে তার মনে কৌতুহল হোলো, এর পরে আর কি হয় জানতে হবে । মরে গিয়েছে, শ্মশানে মাথার খুলিটে শুধু পোড়ে রয়েছে, এখনে৷ ‘ অপরম্বা কিং ভবিষতি ?” পণ্ডিত মড়ার মাথাটা কুড়িয়ে বাড়ী এনে তা একটা হাড়িতে পূরে একটা নির্জন স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখলে। আরও নূতন কিছু হলো কি না। পরীক্ষার জন্যে প্রায়ই হঁড়ির মুখ খুলে দেখে। একদিন পণ্ডিত কাযে । লক্ষে দ্য চারদিনের জন্যে বিদেশ যাত্রা কোবুলে পর কৌতুহলাবিষ্ট পণ্ডিত্যপত্নী সেই হাড়ির মুখ খুলে দেখলেন একটা নরকপাল তার মধ্যে পরম সমাদরে রক্ষিত হোয়েছে। পণ্ডিতের যিনি সহধৰ্ম্মিণী তার পক্ষে এই নরকপাল দেখে তার প্রকৃত তথ্য অনুমান কোরে নেওয়া অবশ্য নিতান্ত সত্ব : ব্যাপার হবার সম্ভাবনা ছিল না । কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত কোল্লেন, অ অ কিছু নয়, পণ্ডিতজীর বোধ হয় কোন প্ৰিয়তমা ছিল ; তার মৃত্যু হওয়াতে বিরহক্লিষ্ট পণ্ডিতবর তার মস্তকটি কুড়িয়ে এনে এইরূপে সঙ্গোপনে হাড়ির মধ্যে রেখে দিয়েছেন, এবং মধ্যে মধ্যে এই কঙ্কালাবশেষখানি দেখেই দুঃসহ বিরহজালা প্ৰশমন করেন । পণ্ডিত-পত্নীর দুৰ্জয় ক্ৰোধ এবং অভিমানের উদয় হোলো। পণ্ডিত সশরীরে সেখানে বর্তমান থাকলে বোধ হয় তিনি সম্মুখ যুদ্ধে আহূত হোতেন। সে বিষয়ে আপাততঃ কিঞ্চিৎ বিলম্ব দেখে পণ্ডিত-পত্নী সেই নরকপালখনি হাঁড়ি থেকে বের কোরে ঢেকিতে চূৰ্ণ কোরে, একটা পচা নর্দামার মধ্যে নিক্ষেপ কোল্লেন। পণ্ডিত গৃহে ফিরে সর্বপ্রথমেইহঁাড়ি দেখতে গিয়ে দেখেন হাঁড়িও নেই কঙ্কালও নেই।