পাতা:হিমালয় - জলধর সেন.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

σ ́ ο হিমালয় । কাজেই আমরা অগ্রসর হোলুম। রাস্তায় জনমানবের সাড়া-শব্দ নেই ; আকাশের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হোতে লাগলো ; কিন্তু নিকটে আর আশ্রয় মিলাবার উপায় নেই । যেই দুই একটা গুহায় আশ্ৰয় নে ওয়া যেতে পাৰ্বতো, তা পিছনে ফেলে এসেছি। বড় গাছও নেই ; আমরা যে পাহাড়ের উপর দিয়ে যাচ্ছি, তার গাছগুলি ছোট ছোট, কোন দিকে একটা ও বড় গাছ নজরে পড়ে না। 彎 ক্রমেই বাতাস বেশী হোতে লাগলো, শেষে রীতিমত ঝড় আরঙ্গ তোলে। প্ৰতি মুহুর্তেই মনে হয়, পৰ্ব্বতশৃঙ্গ বুঝি মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে । অন্ধকার আকাশ, আর শন শন শব্দ ; আমরা চারিটি প্ৰাণী সেই প্ৰলয় কাণ্ডের ভিতর দিয়ে চলচি, পদস্থলিত হোয়ে নীচে পড়বার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশী । খানিক পরেই অল্প বৃষ্টি পোড়তে লাগলো, আমরা ও প্ৰাণের দায়ে যত দ্বার সাধ্য দ্রুতপদে আশ্রয়ের সন্ধানে গোলতে লাগালুম। কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যে বৃষ্টি বন্ধ হোয়ে মুষলধারে শিলাপাত আরম্ভ তোলে! ; তখন আমরা হতাশ হোয়ে পোড়লুম। এই পাৰ্বত্য দেশে যে রকম বড় বড় শিলা বৰ্মণ হয়, আমাদের সমতল প্রদেশের অনভিজ্ঞ লোকদের তা বুঝিয়ে উঠা যায় না । এক একটা কি ? এক একটা বেলের মত, সুতরাং তা মাথায় পড়া দূরের কথা, শরী . পোড়লে শরীরের কি রকম দুৰ্দশ হোতে পারে, তা কল্পনায় উত্তমরূপ হৃদয়ঙ্গম করা কঠিন হয় । আমরা উপায়ান্তর না দেখে তা ভ্রাতাড়ি পাহাড়ের গায়ে ঠেস দিয়ে আগাগো দ্রা কম্বল মুডি দিলুম, কিন্তু তাতে মাথা বঁাচান কঠিন দেখে কম্বলপ্তানায় কয়েক ভাজ দিয়ে পুরু কোরে তা দিয়ে মাথা ও মুখ ঢেকে রাখা লুম। গায়ের উপর দুই একটা শিল পোড় তে লাগলো, এবং তাতে আমাদের অত্যন্ত ব্যতিব্যস্ত কোরে তুললে ; কিন্তু উপায়ান্তর নেই, তবু আমাদের পরম সৌভাগ্য ষে, মাথাটা কোন রকমে রক্ষা হোলো, কিন্তু বোধ হতে লাগলো, শীতে বুঝি বুকের রক্ত জমে যায়।