জননী সোণামণি দেবী। ༣ প্রতিবেশিগণের মধ্যে এই দেবী-স্বভাবা রমণী নানা কারণে প্রচুর সন্মান ও প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিলেন। সে গুলির পুঙ্ক্ষানুপুঙ্খ। আলোচনা বহুজ্ঞাতব্য বিষয়ে পূর্ণ হইলেও, সহসা সে গুলির সংগ্রহ সম্ভৰপর নহে। তবে এ কথা ঠিক যে, স্তর গুরুদাসের অকপট, নির্ম্মল ও সৌজন্যপূর্ণ মিষ্টব্যবহার দীর্ঘকাল ধরিয়া তাহার মাতৃদেবীকে নিকটবর্ত্তী জনমণ্ডলীমধ্যে পূজার পাত্রী করিয়া রাখিয়াছিল। র্তাহার সাধু ব্যবহারের অন্তরালে লোকে তঁাহার সাধবী ও পুতকর্ম্মানুরাগি,ণী জননীর নিষ্ঠা ও ধর্ম্মভাবের আভাস অনুভব করিয়া থাকে। হিন্দুরমণী শ্বশুরকুলের নাম রক্ষার জন্য যেমন লালায়িত, শ্বশুরের ভিটায় প্রদীপ দেওয়াও তেমনই গৌরবের বিষয় বলিয়া অনুভব করিয়া থাকেন। গুরুদাস জ্ঞান ও গুণের অধিকারী হইয়া যখন বহরমপুরে ওকালতি করিতে যান, তখন তঁহার মাতা অনিচ্ছাপূর্বক সকলকে লইয়া পুত্রের সঙ্গে বিদেশবাসিনী হইলেন, কিন্তু সর্বদাই নারিকেল ডাঙ্গার ডাঙ্গাটি তাহার হৃদয়ে জাগিয়া থাকিস্ত। সর্বদাই বলিতেন, “সামান্য কিছু করিয়া লও, পরে চল বাড়ী যাই; বাড়ীতে থেকে ক্লেশ পাই সেও ভাল! এখানে কেন থাকিবে?” নিয়ত মায়ের এই ইচ্ছা শুনিতে শুনিতে স্যর গুরুদাস কলিকাতা হাইকোর্টে ওকালতি করিতে আসিলেন। মাতৃ- আদেশে পুনরায় নারিকেলডাঙ্গার বাটীতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হইলেন। · হাইকোর্টের জজ হইবার পর বন্ধুবান্ধবদের অনেকে চৌরঙ্গী অঞ্চলে বাড়ী করিয়া, বা ভাড়া লইয়া, বাস করিবার পরামর্শ দিয়াছিলেন। সে পরামর্শ মাতাপুত্র উভয়ের-কাহারই মনঃপূত হয় নাই। দুর্দিনের সংগ্রামক্ষেত্র নারিকেলডাঙ্গার বাসভবন গুরুদাসের জননীর বড়ই প্রিয়-স্থান ছিল। তিনি এই স্থানটিকে জীবন-সংগ্রামের তীর্থ-স্থান বলিয়া মনে করিতেন। “