পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম অধ্যায়-সূপ।
১৩৩

ঝাঁঝরা হাতার সাহায্যে তাহা ছাঁকিয়া উঠাইয়া ফেলিতে পারিবে। এই প্রকারে ক্রমে বার তিন চারি ছাঁকিয়া ফেলিলেই যুষ ক্রমে অনেকটা পরিষ্কার হইয়া আসিবে। তখন যুষে ফেলান আনাজ গুলি সব উঠাইয়া ফেলিবে এবং মৎস্য সুসিদ্ধ হইয়া এলিয়া গেলে জল হইতে হাঁড়ি নামাইয়া ঠাণ্ডা করিবে। এই সময় চিনির রসের গাদ কাটার ন্যায় পুনঃ গাদ কাটিয়া একখানা পুরু ন্যাকড়ার সাহায্যে ছাঁকিয়া ‘যুষ’ বা ক্কাথটুকু লইবে। অতঃপর ঘৃতে বা তৈলে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা এবং গুরুপক্ব করিলে তৎসহ গরম মশল্লা ও পেঁয়াজ, রশুনাদি ফোড়ন দিয়া তাহাতে এই যুষ সম্বারা দিবে। ইচ্ছা করিলে পুনরায় সূপ ছাঁকিয়া পোড়া ফোড়নাদি হইতে পৃথক করিয়া লইবে।

 ইউরোপীয়গণ পক্ষীর ডিমের শ্বেতাংশের (হরিদ্রাংশ নহে) দ্বারা যুষ সাফ (clarify) করিয়া লইয়া থাকেন। মৎস্য মাংসাদি সুসিদ্ধ হইয়া এলাইয়া গেলে যখন জ্বাল হইতে নামান হয় তখন তাঁহারা উহা ঠাণ্ডা করিয়া তাহাতে পক্ষীর ডিমের শ্বেতাংশ মায় ডিমের খোলা উত্তমরূপে ফেটাইয়া লইয়া মিশান এবং সমস্ত উত্তমরূপে নাড়িয়া পুনঃ জ্বালে উঠাইয়া গরম করিয়া লয়েন। ইহাতে ডিমের শ্বেতাংশ তাপে দৃঢ়াইয়া গেলে যুষ জাল হইতে নামাইয়া স্থির ভাবে রাখিয়া পুনঃ ঠাণ্ডা হইতে দেন। ইহাতে যুবে মিশ্রিত দৃঢ়ান ডিমের শ্বেতাংশ যুষের সমস্ত অবশিষ্ট গাদ ক্লেদাদি শোধনপূর্ব্বক লইয়া ক্রমে উপরিভাগে ভাসিয়া উঠিবে, অধিকন্তু যুষ ঠাণ্ডা হওয়া প্রযুক্ত ঐ সঙ্গে মৎস্য মাংসাদির মেদ বসাদিও দৃঢ়াইয়া উপরিভাগে ভাসিয়া উঠিবে। এক্ষণে পাৎলা ‘নামদায়’ বা পুরু ফ্লানেলে প্রস্তুত ছাঁকনায় এই যুষ ছাঁকিয়া লইলে উহা সুন্দর পরিষ্কার উজ্জ্বল টলটলে হইবে। অতঃপর পোড়া চিনির রঙ্গ (caramel) বা অপর কোনও প্রকার রঙ্গ মিশাইয়া আবশ্যক মত বাদামী (brown) বা অন্যবিধ রঙ্গ করিয়া লইবে। কিন্তু এখানে একটু বক্তব্য আছে;—ইউরোপীয়গণ অতঃপর আর এই ক্কাথ বা যুষ সম্বারা দিয়া সূপে