বেওয়ারিশ লাস

উইকিসংকলন থেকে
বেওয়ারিশ লাস

DETECTIVE STORIES No. 79. দারোগার দপ্তর ৭৩ম সংখ্যা।


বেওয়ারিশ লাস।

(অর্থাৎ পথ-পার্শ্বস্থ পুলিন্দার ভিতরে

প্রাপ্ত লাসের অদ্ভুত রহস্য!)

শ্রীপ্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায় প্রণীত।

সিক্‌দারবাগান বান্ধব পুস্তকালয় ও

সাধারণ পাঠাগার হইতে

শ্রীবাণীনাথ নন্দী কর্ত্তৃক প্রকাশিত।

All Rights Reserved.

সপ্তম বর্ষ।]
সন ১৩০৫ সাল।
[বৈশাখ।


Printed By Shashi Bhusan Chandra, at the

GREAT TOWN PRESS,

68, Nimtola Street, Calcutta.


প্রকাশকের মন্তব্য।

 আজ “দারোগার দপ্তর” সপ্তম বৎসরে পদার্পণ করিল। এদেশে সাময়িক পত্র নিয়মিতরূপে এত অধিক দিন একাদিক্রমে প্রচলিত থাকা বড় অনেকের ঘটেনা; সুতরাং ইহা গৌরবের কথা, তাহার আর সন্দেহ নাই। গ্রাহকগণের উপরেই সাময়িক পত্রের জীবন ও উন্নতি নির্ভর করে। আমাদের সেইরূপ অনুগ্রাহক গ্রাহক, যথেষ্ট আছেন বলিয়া, আজ আমরা গৌরবান্বিত হইতেছি। আজ তাই এই আনন্দের দিনে নূতন বর্ষারম্ভে সেই সকল গ্রাহকের নিকট আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাইতে আসিয়াছি। তাঁহাদের এইরূপ অনুগ্রহ ও সাহায্য পাইলে অন্ততঃ আমাদের জীবনকাল পর্য্যন্ত এই দারোগার দপ্তরের অস্তিত্ব থাকিবে।

 কেহ কেহ এইরূপ বলিয়া থাকেন যে, এই দারোগার দপ্তরের দ্বারা জুয়াচোর, বদ্‌মায়েসদিগের নূতন জুয়াচুরি বুদ্ধির পথ প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু জানি না, ইহা দ্বারা জুয়াচোরগণ সাহায্য প্রাপ্ত হয়, কিম্বা সাধারণ লোকে সেই জুয়াচোরগণ-কৃত কার্য্যের বিপক্ষে বাধা দিবার জন্য উপায় শিক্ষা প্রাপ্ত হয়। কারণ, আমরা কল্পনার অতিরঞ্জিত কোন চিত্র এই পুস্তকে দিই না; যাহা বাস্তবিক ঘটনা, এ দেশীয় জুয়াচুরি বুদ্ধির আয়ত্বাধীন, তাহাই ইহাতে লেখা হইয়া থাকে। তাহার পর সামান্য জুয়াচোর, বদমায়েস লোক পুস্তক পাঠ করে না; শিক্ষিত জুয়াচোরগণ পুস্তক পাঠ করে বটে, কিন্তু এরূপ পুস্তক দ্বারা তাহাদের বুদ্ধিবৃত্তির বিশেষ সাহায্য হইয়া থাকে, তাহা যদি মানিয়া লওয়া হয়, তবে আমাদের দারোগার দপ্তর অপেক্ষা ভয়ানক ঘটনা-পূর্ণ বিলাতী ডিটেক টিভ গল্প পুস্তক হইতে তাহারা অনেক অধিক সাহায্য পাইতে পারে। ইহা ত গেল, প্রতিদিন-ঘটিত এ দেশীয় ঘটনার কথা। কিন্তু যখন কল্পনার অতিরঞ্জিত ঘটনা-পূর্ণ নভেলাদি পড়িয়া এ দেশীয় স্ত্রী-বালকগণ বিকৃত-বুদ্ধি ও বিজাতীয় প্রকৃতি প্রাপ্ত হয়, তখন ত কেহ কোন কথা কহেন না, সেরূপ নভেলাদি সম্বন্ধে এইরূপ মন্তব্য প্রকাশ করেন না! ইহার কারণ কি, কেহ কি বলিতে পারেন?

 “দারোগার-দপ্তর” একবারে সম্পূর্ণরূপ নূতন ধরণের পুস্তক। এরূপ পুস্তক ইতিপূর্ব্বে বাঙ্গালা ভাষায় প্রচারিত হয় নাই। সুতরাং ইহা কোন্ শ্রেণীর পুস্তক, ইহা “কাব্য বা উপন্যাস” তাহা অনেকে ঠিক করিতে পারেন না। তবে ইহা গল্প ধরণে লেখা হইলেও, ইহাকে কাল্পনিক ঘটনা-পূর্ণ উপন্যাস বলা যাইতে পারে না। এরূপ স্থলে ইহার লেখক “উপন্যাসিক” পদ-বাচ্য কিরূপে হইবেন, বলিতে পারি না। আর বোধ হয়, এ পর্য্যন্ত সে কথা কেহ বলেন নাই। তবে কোন লেখক “দাবোগার দপ্তরের গল্প-লেখক”কে “কবি-উপন্যাসিক” বলিয়া, বিদ্রূপ-বাণ বর্ষণ করিলেন কেন বুঝিতে পারিলাম না। অবশ্য ইহা স্বীকার্য্য যে, কোন কোন সমালোচক দারোগার দপ্তরের ঘটনা-সমাবেশের বৈচিত্র্য ও পুস্তক-গত ভাষা সম্বন্ধে প্রশংসা করিয়াছেন।

 আর একটা গুরুতর কথা এখানে না বলিয়া থাকিতে পারিলাম না। গত বৎসর বৈশাখ মাসে দারোগার দপ্তরে “মাংস ভোজন” নামে যে পুস্তকখানি বাহির হইয়াছিল, সেই সম্বন্ধে পূর্ণিমা” পত্রিকায় শ্রদ্ধাস্পদ বাবু অক্ষয়চন্দ্র সরকার মহাশয় আমাকে সমাজ-দ্রোহী বলিয়া প্রচার করিতে প্রস্তুত হইয়াছেন। তবে যদি মাংস ভোজন পুস্তকের ঘটনার যথার্থ নাম ধামাদি এবং কার্যকলাপ যথার্থ বলিয়া অক্ষয় বাবুর নিকট প্রমাণ করিয়া দিতে পারি, তবে আমার উক্ত কলঙ্কের ক্ষালন, হইবে। কিন্তু বিজ্ঞ, ভূতপূর্ব্ব “সাধারণী” পত্রের উপযুক্ত সম্পাদক মহাশয়কে জিজ্ঞাসা করি যে, আমরা যে সকল সমাজ-কালিমার প্রচার করি, সেই কালিমার প্রকৃত নিয়োক্তার নাম ধাম প্রভৃতি প্রকাশ করা কি আমাদের কর্ত্তব্য? বিশেষতঃ উক্ত ঘটনার নায়ক, একজন সম্ভ্রান্ত উচ্চপদস্থ ব্যক্তি (বোধ হয় (!) মুন্সেফ)। আর অক্ষয় বাবু যে সময় সংবাদ পত্র পরিচালন করিতেন, বোধ হয়, উক্ত ঘটনা সেই সময়ে বাঙ্গালা দেশের মধ্যেই ঘটিয়াছিল। (অবশ্য কলিকাতার লোকে সে স্থানকে “বাঙ্গাল” দেশ বলিয়া থাকেন)। অতএব অক্ষয় বাবুর পক্ষে উক্ত ঘটনাকে কাল্পনিক বলিয়া ধারণা করা কি বিজ্ঞতার কার্য্য হইয়াছে? অপর লোক হইলে আমরা এ বিষয়ে কিছুমাত্র উল্লেখই করিতাম না।

 যাহা হউক, পরিশেষে পরম কারুণিক ভগবানের নিকট প্রার্থনা করি, যেন তাঁহার অনুকম্পায় পুর্ব্ব পূর্ব্ব বৎসরের ন্যায় এ বৎসরেও গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি হইয়া, দারোগার দপ্তর আরও উন্নতি পথে অগ্রসর হয়, এবং ইহার জীবনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপিত হয়। ইতি—

সিকদারবাগান-বান্ধব-পুস্তকালয়
ও সাধারণ-পাঠাগার।

শ্রীবাণীনাথ নন্দী,
প্রকাশক।



পরিচ্ছেদসমূহ (মূল গ্রন্থে নেই)

সূচীপত্র

এই লেখাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাবলিক ডোমেইনে অন্তর্গত কারণ এটি ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারির পূর্বে প্রকাশিত।


লেখক ১৯৪৭ সালে মারা গেছেন, তাই এই লেখাটি সেই সমস্ত দেশে পাবলিক ডোমেইনে অন্তর্গত যেখানে কপিরাইট লেখকের মৃত্যুর ৭৫ বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এই রচনাটি সেই সমস্ত দেশেও পাবলিক ডোমেইনে অন্তর্গত হতে পারে যেখানে নিজ দেশে প্রকাশনার ক্ষেত্রে প্রলম্বিত কপিরাইট থাকলেও বিদেশী রচনার জন্য স্বল্প সময়ের নিয়ম প্রযোজ্য হয়।