বিষয়বস্তুতে চলুন

মা

উইকিসংকলন থেকে



মা



ম্যাক্সিম গর্কী

অনুবাদক—বিমল সেন

ব র্ম ণ পা ব লি শিং হা উ স
৭২ হ্যারিসন রোড .: : কলিকাতা

প্রকাশক
ব্রজবিহারী বর্মণ
বর্মণ পাবলিশিং হাউস
৭২, হ্যারিসন রোড,
কলিকাতা

[ প্রকাশক কর্তৃক বঙ্গানুবাদের সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ]

নবম সংস্করণ, জুন, ১৯৫০

কে কে ভট্টাচার্য কর্তৃক
কালিগঙ্গা প্রেস,
৪৬/১ বেচু চাটার্জী ষ্ট্রীট, কলিকাতা
থেকে ১নং হইতে ১০নং ফর্মা পর্যন্ত
এবং
নিউ মহামায়া প্রেস
৬৫/৭ কলেজ ষ্ট্রীট, কলিকাতা হইতে
১১ ফর্মা থেকে বাকিটা
গৌরচন্দ্র পাল কর্তৃক মুদ্রিত।

আড়াই টাকা ]

 ম্যাক্‌সিম গৰ্কীর মা’কে আজ বাঙালীর হাতে দেবার লগ্ন এসেছে। বহু আন্দোলন উত্তেজনার পর বাঙালী আজ বুঝ্‌তে পেরেছে, জাতির চরম দুর্ভাগ্য তার ধন-বৈষম্য। একদল খাটে আর উপােষ করে, আর একদল খায় এবং খাটায়। একদল ন্যায্য প্রাপ্য হ’তে বঞ্চিত—সে বঞ্চনাকৌশলের নাম আইন; আর একদল চাহিদার বেশি গ্রাস ক’রে থাকে—সে বুভুক্ষার যুক্তি আভিজাত্য! শুধু রুশে নয়, সর্বদেশেই এবং বাঙলায়ও এই অবস্থা। চাই আজ মার্ক্‌সের নব-নীতি,—চাই আজ মজুর-বিপ্লব।

 সেই বিপ্লবেরই অগ্রদূত গৰ্কীর ‘মা’। মা বিপ্লবীদের অগ্নিবেদ। বিপ্লব-আন্দোলনের সমস্ত মনস্তত্ব এতে ফুটে উঠেছে নিখুঁতভাবে এবং অগ্নি-বর্ষী ভাষায়। সমস্ত দেশের সমস্ত বিপ্লবী যেন মা’র মধ্যে এসে ঘনীভূত হ’য়েছে। বছরের পর বছর ‘মা’ সকল দেশের—বিশেষ করে, বাঙ্‌লার বিপ্লবীদের অনুপ্রাণিত ক’রে এসেছে। ‘মা’ পড়লেই এই কথাটা সবার আগে মনে হবে।

 কিন্তু এই নব-নীতির পথ কোনাে দেশেই সহজ হয় নি। বহু দ্বিধা, বহু সংস্কার, বহু নির্যাতন, বহু নিরাশায় দুল্‌তে দুল্‌তে একে এগােতে হয়েছে। সাম্‌নে দাঁড়িয়েছে এর পর্বতােপম দুর্লঙ্ঘ্য বাধা; এ হয়তাে থম্‌কে দাঁড়িয়েছে কিন্তু পিছােয়নি, বাধা বিদীর্ণ ক’রে দেশের অন্তরে প্রবেশ ক’রেছে। গর্কী ‘মা’র চরিত্রে এই রুশ-জননীর অগ্রগতিকে রূপ দিয়েছেন। যে মা প্রথমে দুঃখকে একমাত্র ভাগ্যলিপি মনে ক’রেছিলেন—বিপ্লবের নামে আঁৎকে উঠেছেন, দিনে দশবার ক’রে মানুষের অনুষ্ঠিত অত্যাচারের প্রতিকারের জন্য কেঁদে পড়েছেন ভগবানের কাছে, তিনিই ধীরে ধীরে দীক্ষিত হলেন পূর্ণ বিপ্লবমন্ত্রে—ভগবানের বিরুদ্ধে ক’রলেন বিদ্রোহ। বাধা হ’ল তাঁর দূর। প্রচ্ছদপটে শিল্পী মা’র এই ভাবটাই পরিস্ফুট করেছেন—নব-নীতি আপাত-অলঙ্ঘ্য পর্বত-সমান বাধার সাম্‌নে এসে দাঁড়িয়েছে এই দৃঢ়সংকল্প নিয়ে যে বাধা অপসারিত ক’রে পথ ক’রে নেবেই।

 আজ মা’কে পাঠক-সমাজের হাতে দেবার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও এটা স্থির জান্‌চি যে, আমাদের দেশেও আজ এ নব-নীতি অবজ্ঞাত, উপহসিত, বাধাপ্রাপ্ত হ’লেও অদূর ভবিষ্যতে এর পথ খােলসা হবে,—না হয়ে থাকবেনা। আমরা সেই ভবিষ্যতের দিন গুনছি।

বিমল সেন 

পরিচ্ছেদসমূহ (মূল গ্রন্থে নেই)

সূচীপত্র